এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৮ ডিসেম্বর : ফের একবার রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের পতন নিয়ে ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । শনিবার কলকাতা বিমানবন্দরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বিদায় জানানোর পর দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি । শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার চেম্বারটা কেমন দেখানোর জন্য ডাকলেন,না চা খাওয়ার জন্য ডাকলেন,তা তো আমি বলতে পারবো না । কিন্তু ব্যাপারটার মধ্যে কোনো রাজনৈতিক তাৎপর্য খোঁজার কোনো কারন নেই । কালকের মিটিংয়ের একটা কথা শুধু আমি বলতে পারি । কে বলেছে আমি বলবো না, সেটা হচ্ছে ‘টাইম হো গয়া’।’ আরও স্পষ্ট করে তিনি বলেন,’পশ্চিমবঙ্গের বড়বড় ডাকাত,চোর, অত্যাচারীরা, পরিবারবাদ এবং তোষণবাদ আমদানী করা লোকেদের বিরুদ্ধে যা যা ব্যবস্থা করা উচিত সংবিধান মেনে, সেটা করা হবে । আমরা আশ্বস্ত,আমরা কালকের মিটিংয়ে খুব উৎসাহিত ।’ সেই সঙ্গে তিনি শুনিয়ে দেন,আমরা সন্তুষ্ট । খুব আনন্দের সঙ্গে আমরা বিমানবন্দর থেকে অমিত শাহজির ভোকাল টনিক নিয়ে প্রস্থান করছি ।
উল্লেখ্য,শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দেখা করেছেন এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর ফাঁড়ির জন্য জমি এবং রেল প্রকল্প এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ২৫ তম ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিলের সভায় পৌঁছানোর সময় অমিত শাহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে প্রায় ২০ মিনিট আলোচনা করেছিলেন। নবান্নে অমিত শাহ কর্তৃক আহ্বান করা ইস্টার্ন জোন কাউন্সিলের ওই বৈঠকে রাজ্য সরকারের সচিব,পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং ওড়িশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন । বৈঠকে ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তে বেড়া দেওয়া, আন্তঃসীমান্ত চোরাচালান ও মালবাহী করিডোর সময়মতো শেষ করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয় ।
শুভেন্দু বলেন,’আমি এবং আমাদের মাননীয় রাজ্য সভাপতি এখানে ওনাকে সিঅফ করতে এসেছিলাম । আমায় দেড় দু’মিনিট কথা বলার সুযোগ উনি আমাকে দিয়েছিলেন । বিরোধী দলনেতা হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ আলোচনার বিষয়ে জানতে চেয়েছি । তিনি আমায় বলেছেন,ওপেন মিটিং এজেন্ডা অনুযায়ী হয়েছে । কিন্তু ওয়ান টু ওয়ান মিটিংয়ে বিএসএফের ৭২ টা চৌকির জন্য রাজ্য সরকার জমি দিচ্ছে না । বিএসএফ এবং রাজ্য পুলিশের মধ্যে আরও ভালো সহযোগীতার জন্য উনি মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন । কারন পশ্চিমবঙ্গ সীমানা জাতীয় স্বার্থে ভারতের জন্য খুব মুল্যবান ।’ তিনি আরও বলেন,’পুরো ভারতের বর্ডার এলাকায় কাঁটা তার কমপ্লিট । কাশ্মীর,অরুনাচল পর্যন্ত কমপ্লিট হয়ে গেছে । এখানে ৭২ টা চৌকি করার জন্য রাজ্য সরকার জায়গা দিচ্ছে না । এটাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওয়ান টু ওয়ান মিটিংয়ে এটাই এজেন্ডা ছিল । উনি রাজ্য সরকারকে চৌকি নির্মানের জন্য বারেবারে অনুরোধ করেছেন ।’
শুভেন্দুর অভিযোগ,’বিএসএফ পুষ্পবৃষ্টি করছে বলে এনামুলরা জেলে । বর্ডারে গরু পাচার হচ্ছে না । কিন্তু বাঁকুড়া, আরামবাগ হয়ে কিন্তু ঝাড়খণ্ড দিয়ে গরু পাচার করা হচ্ছে জলপথ দিয়ে । পাশাপাশি আমি বিএসএফের কর্তাকে বলেছি রানীনগর ও জলঙ্গি দিয়ে ফেন্সিডিল ও ইবাবা ট্যাবলেট রাজ্য পুলিশ ছোট গাড়ি করে পাচার করছে । আর তার টাকা তুলে পুলিশ সরাসরি কয়লা ভাইপোর বাড়ি শান্তিনিকেতনে পৌঁছে দিচ্ছে । এই জিনিস বন্ধ হওয়া দরকার । বন্ধ না হলে যা ব্যবস্থা নেওয়ার আমরা নেবো ।’
শুভেন্দু বলেন,’সোমবার সাংসদদের যে মিটিংটা দিল্লিতে হবে তাতে আমারও ডাক আছে । তিনি বলেছেন তুমি সোমবার দিন ফিরবে না । সোমবার তুমি দিল্লিতে থাকবে । মঙ্গলবার তোমায় আমি ৩০ মিনিট সময় দিচ্ছি পার্লামেন্টে আমার অফিসে এসে সাক্ষাৎ করবে । অনেকগুলি বিষয় আছে যেটা তোমার এবং রাজ্য সভাপতির সঙ্গে আমার আলোচনা করা দরকার । মঙ্গলবার উনি দেখা করলে আমি বলবো, আপনি সরাসরি জায়গা কিনে চৈকি বানিয়ে অনুপ্রবেশ কারীদের হাত থেকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে বাঁচান ।’।