এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,১৪ ডিসেম্বর : মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পর আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ইরানি ফুটবলার আমির নাসর-আজাদানি । পেশাদার ফুটবলারদের বিশ্ব ইউনিয়ন ফিফপ্রো বলেছে,’আমির নাসর-আজাদানি মর্মাহত ও অসুস্থ’ । চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বরে ইরানি সেনা ও ক্ষিপ্ত জনতার “সশস্ত্র দাঙ্গায়” তিনজন নিরাপত্তা এজেন্ট নিহত হয়েছিল । ওই দাঙ্গায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে দুই দিন পর ইসফাহান শহরে নাসর-আজাদানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল । কিন্তু বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের কারনে তখন তাঁকে মুক্ত করে দেওয়া হয় বলে ইরানি সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ কে জানিয়েছেন ইসফাহানের বিচার বিভাগীয় প্রধান আবদুল্লাহ জাফারি ।
উল্লেখ্য,নাসর-আজাদানি জাতীয় দলের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৬ স্তরে খেলেছিলেন । তেহরান দল রাহ-আহানের সাথে তাঁর ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয় । তখনই তিনি প্রথমবারের মতো ইরানের শীর্ষ ফ্লাইট লীগে খেলেছিলেন । এই ডিফেন্ডার সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ট্র্যাক্টর এসসির হয়ে ওয়েলসের প্রাক্তন কোচ জন তোশ্যাকের অধীনে খেলেছেন এবং বর্তমানে এফসি ইরানজাভান বুশেহরে রয়েছেন ।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর মাহসা বা ঝিনা আমিনিকে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ হেফাজতে পিটিয়ে মারার পর থেকে বিক্ষোভের আগুনে উত্তপ্ত ইরান । ওই বিক্ষোভ আন্দোলনের সমর্থক ইরানি ডিফেন্ডার আমির নাসর-আজাদানি । মাহসার মৃত্যুর দিন পথে নেমে তাঁকে বিক্ষোভে অংশ নিতেও দেখা গিয়েছিল । এমনকি আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানের জাতীয় দল কাতার বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের উদ্বোধনী ম্যাচে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে অস্বীকার করে । কিন্তু পরে ইরান সরকারের হুঁশিয়ারিতে পরে ওয়েলস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পরবর্তী ম্যাচগুলিতে তাদের সঙ্গীত গাইতে দেখা যায় তাদের । অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, বিক্ষোভের জন্য ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হয়েছে এবং নাসর-আজাদানি সহ অন্তত আরও নয়জনের মৃত্যুদণ্ডের ঝুঁকিতে রয়েছেন । ইরান সরকার এই বিক্ষোভকে “দাঙ্গা” বলে অভিহিত করে দাবি করছে যে বিক্ষোভকারীরা ইরানের বিদেশী শত্রুদের দ্বারা উৎসাহিত হচ্ছে । বিশিষ্ট প্রাক্তন আন্তর্জাতিক তারকা ভোরিয়া গাফৌরি গত মাসে ইরানে বিক্ষোভকে সমর্থন করেন । তিনি ইরান সরকারের দমনপীড়নের নিন্দা করলে তাঁকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল । কিন্তু পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান । বিক্ষোভের সমর্থক প্রাক্তন ইরানী আন্তর্জাতিক তারকা আলী করিমি একটি টুইটে ফুটবলারকে সমর্থন করে বলেছেন, ‘আমিরকে মৃত্যুদণ্ড দেবেন না ।’।