গৌরনাথ চক্রবর্ত্তী,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান) ২১ফেব্রুয়ারী : শতাব্দী প্রাচীন দেবাসিন চন্ডীমাতার পুজো ঘিরে অকাল শারোদৎসবে মাতল কাটোয়ার আমূল গ্রামের বাসিন্দারা । প্রতিবছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে হয় দেবাসিন চন্ডীমাতার পুজো । এবছর তিথি অনুযায়ী ফাল্গুনমাসে পুজো হচ্ছে । বসেছে মেলা । দেবাসিন চন্ডীমাতার পূজো ঘিরে দূরদূরান্তর গ্রাম থেকে শ্রদ্ধালুরা ভিড় জমিয়েছে আমূল গ্রামে।
কাটোয়ার সিঙ্গি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত প্রত্যন্ত এক গ্রাম আমুলগ্রাম । প্রায় ৫০০ পরিবারের বসবাস । শারদ্যোৎসবের সময় গ্রামে কোনও দূর্গাপূজো হয় না । পরিবর্তে মাঘ মাসে দেবাসিন চন্ডীমাতার পূজোয় সেই আনন্দ পুষিয়ে নেন গ্রামবাসীরা । আদপে এই পূজো পারিবারিক হলেও কালক্রমে তা সার্বজনীন রূপ পেয়েছে ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় ৪০০ বছর আগে দেবাসিন চন্ডীমাতার পূজোর সূচনা করেছিলেন আমূলগ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের কোনও এক পূর্বপুরুষ । কথিত আছে,তিনি স্বপ্নাদেশ পেয়ে আমূলগ্রামের পশ্চিমদিকে দেবাসিন নামে দিঘির জলের তলা থেকে দেবী চন্ডীর শিলামূর্তি উদ্ধার করেছিলেন । তারপর থেকে প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথি থেকে চারদিনের পুজো হয়ে আসছে ।
দেবাসিন চন্ডীমাতার পুজোয় দু’টি মূর্তি পাশাপাশি রেখে পুজো করা হয় । একটি আদি শিলামূর্তি। অপরটি মাটির প্রতিমা । দেবাসিন চন্ডীমাতার মাটির প্রতিমা বিচিত্র ধরনের। দেবীর ডানদিকে রয়েছে চারটি হাত আর বাঁদিকে ছ’টি হাত। তার মধ্যে ডানদিকের একটি ও বাঁদিকের দু’টি হাত বড় । বাকি সাতটি হাত তুলনামূলক ছোট । মাটির প্রতিমাটি অবশ্য প্রতিবছর নির্মাণ করা হয় না । শুধুমাত্র দেবীমূর্তির অঙ্গহানি হলে নতুন প্রতিমা নির্মাণ করতে হয় ।
সপ্তমী থেকে নবমী এই তিন তিথির পূজো এক দিনেই শেষ করতে হয় । তবে দেবাসিন চন্ডীমাতার পুজো একদিনের পুজো হলেও আচার মেনে চারদিন ধরেই উৎসব চলে । অনেকে মানত করেন । মনঃষ্কামনা পূর্ন হলে বছরের এই দিনে তাঁরা দেবীকে পুজো দিয়ে যান । এদিন রবিবার থেকে শুরু হয়েছে আমূল গ্রামের দেবাসিন চন্ডীমাতার পূজো । এই পূজো ঘিরে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছে এলাকার আপামর মানুষ ।।