এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,১২ ডিসেম্বর : পাঁচ দিনের মধ্যে ফের এক বিক্ষোভকারীকে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝোলালো ইরান । এবারে ২৩ বছরের এক ক্রীড়াবিদের প্রাণ অকালে কেড়ে নিল ইরান সরকার । সোমবার সকালে মজিদ রেজা রাহনাভার্ড (Majid Reza Rahnavard) নামে ওই তরুনকে মাশাহদে (Mashhad) জনসমক্ষে ক্রেনের সাহায্যে ফাঁসিতে ঝোলানো হয় । মজিদ রেজা । একজন কুস্তি চ্যাম্পিয়ন ছিলেন । মাত্র ২৩ দিন আগে তাঁকে মোহারেবেহ বা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে শত্রুতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল । ওই যুবককে ফাঁসিতে ঝোলানোর আগে এদিন সকালে তাঁর বাবা-মাকে ফোন করে ফাঁসি কার্যকরের বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় । এমনকি বলা হয় যে পুলিশ কবরস্থ কর ব্যবস্থা করেছে । ফলে ছেলের মুখটা শেষবারের মত দেখতেও পারেননি মজিদ রেজার বাবা-মা ।
এদিকে মজিদ রেজা রাহনাভার্ডের মৃত্যুদণ্ডের পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে ইরানের সাধারণ মানুষ । তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসলামী প্রজাতন্ত্র এবং ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু সৈয়দ আলী হোসেইনি খোমেনির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে । এক ইউজার্স টুইটারে লিখেছে,’ইরানিয়ান শাসনের বিচার বিভাগ দ্বারা পরিচালিত মিজান বার্তা সংস্থার মতে, মাজিদ্রেজা রাহনাওয়ার্দ (২৩) কে আজ সকালে মাশহাদে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে । খামেনির লক্ষ্য জনসাধারণকে ভয় দেখানো এবং যেকোনো মূল্যে ইরান বিপ্লবকে নীরব করা ।’
অন্য একজন লিখেছেন,’মাজিদ্রেজা রাহনাভার্ড ছিলেন একজন ক্রীড়াবিদ, একজন ২৩ বছর বয়সী… ইসলামী প্রজাতন্ত্র কর্তৃক মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে । ঠান্ডা মাথায় খুন । যদি ইসলামিক স্টেট গুরুতর পরিণতির মুখোমুখি না হয়, তাহলে ৮০-এর দশকের মতো একের পর এক বন্দীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে থাকবে ।’
এক টুইটার ইউজার্স লিখেছেন,’ইরানের ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নৃশংস সরকার একজন রাজনৈতিক বন্দী মাজিদ রেজা রাহনাভার্ডকে ফাঁসি দিয়েছে। এটি হলিউডের কোনো থ্রিলার নয়, মানবতার বিরুদ্ধে সত্যিকার অপরাধ নয়, ইরানে যা ঘটছে তার বাস্তব চিত্র ।’ অনেকে বিশ্বের সভ্য দেশগুলি ও জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার হস্তক্ষেপের দাবিও তুলেছেন ।
প্রসঙ্গত,বৃহস্পতিবার মোহসেন শেকারি নামে এক বিক্ষোভকারী যুবককে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল ইরান সরকার । তার বিরুদ্ধেও মোহারেবেহ বা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে শত্রুতার অভিযোগ আনা হয়েছিল । যুবকের ফাঁসি কার্যকর করার পর থেকে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে । অভিযোগ উঠছে,ফাঁসিতে ঝোলানোর আগে শেকারির উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল । তাঁকে অপরাধ স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়েছিল । অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে যে ইরানি কর্তৃপক্ষ অন্তত ২১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে চাইছে, যাতে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করা যায় ।।