এইদিন ওয়েবডেস্ক,চুঁচড়া(হুগলি),১০ ডিসেম্বর : শনিবার সন্ধ্যায় হুগলির চুঁচড়ায় দলীয় সভায় যোগ দিয়ে নজিরবিহীন ভাষায় তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেছেন,’ভাইপো সর্বভুখ । তিনি কয়লা খান। বালি খান । পাথর খান। গরু খান । দেশি মদের বোতল পিছু ৫ টাকা করে খান । ডিয়ার লটারি আর ২৮ টাকার মদের বোতল, এটাই হচ্ছে বাংলার বর্তমান আর ভবিষ্যৎ ।’ এরপর ভিড়ে ঠাসা শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,’তাড়াবেন তো ? পরিবেশ আমরা তৈরি করে দেবো । ওয়ান নেশন ওয়ান পুলিশ । বিলটা শুধু পাশ করতে দিন । আইপিএসগুলো কোথায় যায় দেখবো । সিআরপিসি আইপিসিতে যা খুশি করবো না ? অপেক্ষা করুন ।’
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রীমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নেন শুভেন্দু অধিকারী । রাজ্যের কর্মসংস্থান নিয়ে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন,’মিজোরাম বাইরের রাজ্যের লোককে কাজ দিচ্ছে ।পশ্চিমবঙ্গের লোক মিজোরামে যাচ্ছে কাজ করতে । বামফ্রন্টের সময় ৫ লক্ষ ২০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ছিল । আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন ৪৫ লক্ষ । মাত্র ৯ গুণ বাড়িয়েছেন ।’ তিনি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন,’১২ বছরে কি করেছেন আপনি? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করা একটা এয়ারপোর্টের নাম বলতে পারবেন ? কথায় কথায় বলেন গুজরাট চলবে না । গুজরাটে গত দুটো টার্মে ২২ টা ডোমেস্টিক এয়ারপোর্ট করেছে বিজেপি সরকার । ১৫ টা সিপোর্ট করেছে । আপনি একটা পোর্টের নাম বলুন । একটা ইন্ডাস্ট্রি বলুন তো ? শুধু ভাতা-ভাতা-ভাতা । জন্মালে শিশুসাথি,মরিয়া গেলে সমব্যাথি । এখন সব বন্ধ হয়ে গেছে । আগে ১ তারিখে লক্ষ্মীর ভান্ডার ঢুকত । এখন ২০ তারিখ হয়ে গেছে ।’
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুসলিম তোষনের রাজনীতির অভিযোগ তুলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইমাম মোয়াজ্জেম ভাতা দেন । পুরোহিত, গোঁসাই, দলপতিদের দেন না । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওবিসি “এ” ও “বি” ভাগ করে দিয়েছেন । আবার ওবিসি “বি” তে পাঠিয়ে দিয়েছেন গোয়ালাকে নাপিতকে,তিলিকে, কুম্বকারকে,কুর্মিকে । হিন্দু ওবিসিকে শেষ করেছেন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোষনের রাজনীতি করেন । কিন্তু মোদিজী তোষণ করেন না । যিনি রাষ্ট্রবাদী তার জন্য নরেন্দ্র মোদীজি ।’
তিনি বলেন,’নরেন্দ্র মোদীজি,অমিত শাহজি ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরকে ঠিক করে দিয়েছেন । কাশ্মীরে পঞ্চায়েত ভোটে ৮০ ভাগ আসনে বিজেপি জিতেছে । সংখ্যালঘুরাও ভোট দিয়েছে । গুজরাটে সংখ্যালঘুদের বুথগুলো দেখুন । আমাদের সঙ্গে কারোর বিরোধ নেই ।’ এরপর তিনি বলেন,’আমরা এখানে জঙ্গলরাজ খতম করবো । পরিবারবাদকে উপড়ে ফেলবো । তোষনের রাজনীতি খতম করবো । বিকাশবাদের রাজনীতি আমদানি করবো । শিল্প বানিজ্যে জোয়ার আনবো । কর্মসংস্থান হবে মেধার ভিত্তিতে । পুলিশ হবে দলমূক্ত ।’
শুভেন্দুর কথায়,’সেলাইন থেকে আইসিইউতে চলে গেছে তৃণমূল । প্রায় ভেন্টিলেশনের দিকে । কিছু দিনের মধ্যেই কোমাতে চলে যাবে ।’ পাশাপাশি তিনি শাসকদলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,’ভোট পরবর্তী হিংসার সময় এরা যা যা করেছে তার সুদ আসলে হিসাব নেবো । আর যদি হিসাব নিতে না পারি তাহলে আমরা ভারত মাতার সাচ্চা সন্তান নই ।’
সন্দেশখালিতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সার্ভে করতে যাওয়া এক আশাকর্মী আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’এই চোরগুলো ২০১৮ এর কি সুন্দর লিস্ট করেছে । চোরগুলো গেলেই মার খাবে,তাই আর নিজেরা যাচ্ছে না । ইতিমধ্যে কয়েকজন আইসিডিএস কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। হুগলি জেলাতেও হয়েছে । হয়েছে সন্দেশখালিতে । কাশেম মোল্লা, হাফেজ মোল্লা তৃণমূলের গুন্ডারা আশা বোন, তার নাম আমি বলবো না, সেই আশা বোনের উপর শারিরীক নিগ্রহ করেছে । একবার সিডিপিও বলছেন এফআইআর লজ করুন, তারপরে শেখ শাহাজানের ফোন করে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছিল । ভয়ে ১৫ দিনের মধ্যে সিডিপিও বললেন অভিযোগ প্রত্যাহার করলাম । কোন রাজ্যে আছেন আপনি !’ তিনি বলেন,’কোনো আইসিডিএসের লোক সার্ভেতে যাবেন না । বুঝে নেবো আমরা । গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে আগামী ১৯ তারিখে আমি ও রাজ্য সভাপতি অ্যাপয়েন্টমেন্ট করেছি ।’।