প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৯ ডিসেম্বর : কমলা নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া । তারস্বরে ডিজেতে এই চটুল লোকগান বাজছিল কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে। তা শুনে আর থমকে দাঁড়িয়ে দাকতে পারেন নি কলেজ অধ্যক্ষ। কলেজ চত্ত্বেরই পড়ুয়াদের সঙ্গে ওই গানের তালে তালে উদ্দাম নাচলেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারি কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশীষ চক্রবর্তী।বৃহস্পতিবারের সেই নাচের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।এই বিষয়টিকে কেউ কেউ টেরা চোখে দেখলেও অনেকেরই বক্তব্য, অধ্যক্ষ পড়ুয়াদের সঙ্গে একটু নেচেছেন বলে তা নিয়ে ব্যঙ্গ করার মত কিছু দেখছেন না তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। যদিও বিরোধী ছাত্র সংগঠন গুলি ঘটনার প্রতিবাদ করেছে।এইসবের পরিপ্রেক্ষিতে বলার অপেক্ষা রাখে না কলেজে অধ্যক্ষের উদ্দাম নাচের ঘটনা বিতর্ক তৈরি করেছে ।
মেমারি কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশীষ চক্রবর্তী পড়ুয়াডের সঙ্গে নাচার বিষয়টি নিয়ে অন্যায় কিছু দেখছেন না জানালেও ভিন্ন কথা শুনিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার সুজিত চৌধুরি শুক্রবার বলেন,’প্রকৃত কি ঘটনা ঘটেছে সেই বিষয়ে আমি এখনও ওয়াকিবহাল নই। তবে যা বলা হচ্ছে তা যদি সত্য হয় তা হলে কলেজের পরিচালন কমিটির কাছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পড়বেন অধ্যক্ষ ।’
দেখুন ভিডিও :-
পড়ুয়াডের কথায় জানা গিয়েছে,বৃহস্পতিবার থেকে,তিন দিনের জন্য মেমারি কলেজে শুরূ হয়েছে নবীন বরণ ও বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।প্রথম দিন প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের বরণ করার সঙ্গে হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সেই অনুষ্ঠানে জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিষ সেন, এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) সুপ্রভাত চক্রবর্তী,মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য,মেমারি থাধার ওসি সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় উপস্থিত থাকেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের পরে তাঁরা চভে যান। এর পরেই কলেজের মাঠে ডিজেতে ’কমলা নৃত্য করে মকিয়া থমকিয়া, এই চটুল লোক গান বাজিয়ে পড়ুয়ারা উদ্দাম নাচ শুরু করেদেয়।পড়ুয়াডের একাংশের দাবি সেই গান শুনে কলেজ অধ্যক্ষ্য দেবাশীষ চক্রবর্তী নিজে আর থমকে থাকতে পারেন নি। তিনি সেখানে পৌছে গিয়ে দু’হাত তুলে পড়ুয়াডের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নাচতে শুরু করে দেন।বেশ কিছুক্ষণ নাচের পরে অধ্যক্ষ মঞ্চে গিয়ে বসে পড়েন।রাতে সেই নাচের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় । যা দেখে অন্য কলেজ শিক্ষক ও অবিভাবকরাও তাজ্জব বনে যান ।
এই বিষয়ে এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরি বলেন,’তৃণমূলের আমলে কোনও কলেজেই নেই সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক আবহ ।পড়ুয়াদের মধ্যে যে কালচার এতদিন দেখা যাচ্ছিল তার সঙ্গে শিক্ষকরা সঙ্গত দেওয়া শুরু করেছেন। এতে কলেজের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে ।’ আর জেলা বিজেপির সহ সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একটা কলেজের সুস্থ পরিবেশ বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব যে অধ্যক্ষের হাতে বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাস্ত
করেছে সেই অধ্যক্ষ্য চটুল গানের তালে তালে
উদ্দাম নাচ নাচছেন!এটা ভাবা যায় না ।’
বিরোধীরা এত কথা বললেও তার সঙ্গে সহমত
হতে পারেন নি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মহম্মদ সাদ্দাম হসেন । তিনি বলেন,
”ছাত্র-শিক্ষক সবাইকে নিয়েই কলেজ। সেখানে ছাত্রদের আবদার মেটাতে কোনও শিক্ষক একটু নাচলে তাতে মহাভারত অসুদ্ধ হওয়ার মত কিছু তিনি দেখছেন না ।’
আর যাঁর নাচ নিয়ে এত হইচই সেই অধ্যক্ষ
দেবাশীষ চক্রবর্তী এদিন দাবি করেন,’মানসিক চাপ কাটাতে দু’হাত তুলে অনেকটা গৌরাঙ্গের মতো নাচের প্রয়োজন রয়েছে।তবে ভিডিয়ো দেখলে বুঝতে পারবেন, পড়ুয়ারা জোর করে হাত ধরে আমাকে নাচাচ্ছে।তার খানিক পরেই আমি মঞ্চে এসে বসে পড়েছি ।’।