এইদিন ওয়েবডেস্ক,দোহা,২৯ নভেম্বর : কাতার বিশ্বকাপের আয়োজক জানার পরই ছোট্ট এই দেশটিতে কীভাবে ১২ লাখ ফুটবলপ্রেমীর থাকার ব্যবস্থা হবে তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল । কারণ এটি কাতারের জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশের সমান । আর সেই আশঙ্কাই সত্যি হল । হোটেল, অ্যাপার্টমেন্ট সব ভর্তি । যেকটি খালি আছে তার ভাড়া লাগাম ছাড়া । পরিস্থিতি আঁচ করে কাতার কর্তৃপক্ষ তিনটি বিশাল ক্রুজ জাহাজেও বিদেশী দর্শকদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করেছিল । সেটাও ভর্তি হয়ে গেছে । ফলে নিরাশ্রয় ফুটবলপ্রেমীরা আশ্রয় নিয়েছেন সেন্ট্রাল দোহায় আল খরের নামের একটি গ্রামের কাছে মরুভূমির মাঝে গজিয়ে ওঠা তাঁবুর ভিতরে । যার নাম দেওয়া হয়েছে আল খোর ফান ভিলেজ । কলকাতা থেকে মেক্সিকোর ফুটবলপ্রেমীরা রয়েছেন সেখানে । কিন্তু তাঁবুতে তালা দেওয়ার ব্যবস্থাও নেই,নেই সেরকম কোনো সুযোগ সুবিধাও । তা সত্ত্বেও এখানেও প্রতিদিন চড়া ভাড়া মেটাতে হচ্ছে বিদেশী দর্শকদের ।
কুয়েতের ২৭ বছর বয়স আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ার হায়দার হাজির অভিযোগ,’এই অস্থায়ী আশ্রয়ের জন্য প্রতি রাতে ৪৫০ ডলার দিতে হচ্ছে । অথচ অস্থায়ী শিবির কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞাপনে বলেছিল, “সত্যিই উপভোগ্য, বিলাসবহুল, থাকার জন্য নিখুঁত গন্তব্য” । কিন্তু এখানে আসার পর দেখতে পাই তাঁবুগুলিতে সাধারণ আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো । গোটা চত্বরের মধ্যে মাত্র একটি সুইমিং পুল এবং একটি আরবি রেস্তোরাঁ রয়েছে ।’ তিনি আরও বলেন,’হোটেলগুলি খুব ব্যয়বহুল। তাই বাধ্য হয়ে এখানে আছি । তবে প্রতিদিন সকালে এখান থেকে দোহায় যাওয়া কষ্টকর ।’
মরক্কো থেকে আসা মুমান অ্যালানি বলেন,’আমরা প্রাণশক্তি চাই। অন্য ফুটবলপ্রেমীদের চাই। এটি খুব অসংগঠিত।’ তাঁবুতে থাকা এক ফুটবলপ্রেমী টুইটারে এই সাইটটিকে “ফায়ার ফেস্টিভ্যাল ২.০” হিসাবে উল্লেখ করেছেন। ফায়ার ফেস্টিভ্যাল ২.০ একটি কুখ্যাত সংগীত উৎসব, যেই জাঁকজমকপূর্ণ উৎসবে অনুরাগীরা অন্ধকার সমুদ্রসৈকতে অস্থায়ী আশ্রয় নিয়ে বাধ্য হয়েছিলেন ৷ কলকাতার এক বাসিন্দা বছর তেইশের আমান মোহাম্মদ একটি সাধারণ জায়গায় আছেন । তিনি জানান, সাফাইকর্মীর জন্য প্রখর রোদে তাকে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল । ঘরের অবস্থা জঘন্য। শৌচাগারের মতো দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল ঘর থেকে । করুণ অবস্থা । তিনি বলেন,’ ‘ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো শেষ বিশ্বকাপ খেলছেন । সেই কারনে তাঁকে দেখতেই এখানে আসা ।তবে ছোটবেলা থেকে এখানে আসা আমার স্বপ্ন ছিল ।’।