এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাবুল,২৫ নভেম্বর : সাধারণ আফগানি মানুষের উপর নির্যাতনের নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করতে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তালিবানরা । এবার ছোটখাটো ভুলের জন্য ১৪ জন আফগানিকে প্রকাশ্যে চাবুক দিয়ে বেদম পেটালো তালিবানের জঙ্গিরা । সাজাপ্রাপ্তদের কারোর কপালে জুটেছে ২১ ঘা চাবুক । কোনো হতভাগ্যকে ৩৯ ঘা চাবুকের আঘাত সহ্য করতে হয়েছে । সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলাও ছিল বলে জানা গেছে । শুধু তাইই নয়,চাবুক মারার শাস্তি দিতে স্টেডিয়ামে রীতিমতো একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল । আর সেই দৃশ্য উপভোগ করার জন্য তালিবানের আমন্ত্রণে জড়ো হয়েছিল শতাধিক স্থানীয় মানুষ । তালিবানের আমন্ত্রণে এসেছিল প্রাক্তন সরকারী কর্মকর্তা, বুদ্ধিজীবি,মুজাহিদিন, বয়স্ক মানুষ, জনজাতি নেতারাও ।
জানা গেছে, ফোনে কথা বলা,বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক,চুরি প্রভৃতি অভিযোগে সম্প্রতি মহিলাসহ ওই ১৪ জনকে ধরেছিল তালিবানরা । তালিবানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হাবিবুল্লাহ আখুন্দজাদা বিচারপতিদের সঙ্গে দেখা করে তাদের শরিয়া আইন অনুসারে শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন । আর আখুন্দজাদার নির্দেশ অনুযায়ী ওই সমস্ত মহিলা ও পুরুষদের ২১ থেকে ৩৯ বার চাবুক মারার শাস্তি দেয় বিচারক । এরপরেই লোগার অঞ্চলের একটি ফুটবল স্টেডিয়ামকে ১৪ জনকে চাবুক মারার জন্য বেছে নেওয়া হয় । গত বৃহস্পতিবার তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে খবর । তালিবানের কর্মকর্তারা সংবাদসংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, কয়েকশ দর্শক এই সাজা দেখার জন্য স্টেডিয়ামে ছিলেন ।
সাজাপ্রাপ্তদের তালিকায় রয়েছেন দারকাদ জেলার মিধা টেপে গ্রামের বাসিন্দা বছর কুড়ির এক তরুনী ।তার বিরুদ্ধে প্রতিবেশী যুবক গোলামের সাথে ফোনে কথা বলা এবং বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তোলা হয়েছে । দু’জনকেই ৩০ বার করে চাবুক মারা হয়েছে ।
প্রসঙ্গত,১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালিবান জমানায় চাবুক মারা, পাথর ছুঁড়ে মারা, অঙ্গচ্ছেদ প্রভৃতি শাস্তি দেওয়া হত । ২০২১ সালের আগস্টে ফের ক্ষমতায় এসে আফগানিস্তানে কঠোরভাবে শরিয়তি আইন রূপায়ণ করতে চাইছে তালিবানরা । ফলে প্রতি মুহুর্তে ঘটছে মানবধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা । বিশেষ করে আফগান মহিলাদের উপর জারি করা হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ । মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক স্তরের স্কুল বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এমনকি চলতি মাসের গোড়ায় আফগানিস্তানের নীতি পুলিশ নির্দেশ দিয়েছে কোনো বিনোদন পর্কে মেয়েরা ঢুকতে পারবে না ।।