এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৩ নভেম্বর : রাজ্যপালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের তালিকায় ছিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নাম । রাজভবনে অনুষ্ঠিত বসার আসনের একেবারে শেষে জায়গা দেওয়া হয়েছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে । সেখানে শুভেন্দুর চেয়ার রাখা হয়েছিল বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া দুই দলবদলু বিধায়কের পাশে । আর এতেই ক্ষিপ্ত শুভেন্দু ওই অনুষ্ঠান বয়কট করেন । পরে তিনি রাজ্যপালের কাছে সময় চেয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা জানিয়ে আসেন । রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাজভবনের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল সুপ্রীমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত তুলোধোনা করেন ।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’ওটা রুচিহীন মানসিকতা । এটা বিকৃত মানসিকতা ছাড়া কেউ করে না । রাজনীতি তো আমাদের অঙ্গ । ওড়িশাতেও রাজনীতি হয় । উত্তরপ্রদেশও রাজনীতি হয় । কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত নোংরা রাজনীতি যোগী আদিত্যনাথজিও করেন না,নবীন পট্টনায়কও করেন না ।’ তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘পরশ্রীকাতর’ বলে কটাক্ষ করে বলেন,’পরশ্রীকাতর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, হিংসায় কোনো অ্যাওয়ার্ড থাকলে একাডেমিতে অ্যাওয়ার্ড এর পাশাপাশি হিংসাতেও পেতেন৷ তিনি ওদের দু’জনকে ডেকে এনে আমাদের পাশে বসানোর ব্যবস্থা করেছিলেন, ‘কেমন দিলাম’ এটা বলার জন্য । কিন্তু আমরা সেই ফাঁদে পা দিইনি ।’
রাজ্যের উন্নয়ন নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন,’উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ জাতীয় সড়কে ফাইটার জেট নামিয়ে দিলেন । আর উনি এত অপদার্থ যে কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি এখনো জুড়তে পারলেন না । জমি দিতে পারলেন না ।’
সম্প্রতি একটি জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে রাজ্যে সিএএ লাগু করতে দেওয়া হবে না । সাংবাদিকেরা এনিয়ে শুভেন্দুর মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন,’ওনার কথা কে শুনবে ? ইতিমধ্যেই গুজরাটে সি এএ চালু হয়ে গেছে । রাজস্থানের ৩ টে জেলায় চালু হয়ে গেছে । লোকসভা আর রাজ্যসভায় পাশ হওয়া কোনো আইন রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিয়ে দিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর কিছু করার নেই । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবিধানের উপরে নয়,নিচে । অতএব উনি কি বললেন না বললেন কিছু যায় আসে না । আসলে পঞ্চায়েত ভোট আসছে, ওনার সংখ্যালঘু ভোট দরকার, তাই তিনি এখন এইসব কথা বলছেন ।’
রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’রাজ্যপালের সাথে আমার ২২ মিনিট কথা হয়েছে । উনি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। প্রথমত, উনি বলেছেন বাংলাকে আমি চিনি । দ্বিতীয়ত, পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে আমার সদর্থক ভূমিকা থাকবে, শাসক বিরোধী উভয়ের সহযোগিতা চাই । তৃতীয় যেটা আমাদের কাছে গর্বের,ওনার বাবা স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন । নেতাজী সুভাসচন্দ্র বসুর অনুগামী । ওনার বাড়ির সবার নামের সঙ্গে ‘বোস’ যুক্ত আছে । এই রকম রাষ্ট্রবাদী,নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোসের ভক্ত আমরা পেয়েছি ।’ তিনি আরও বলেন,’আমি ওনাকে দুটি জিনিস দিয়েছি । একটি ইংরাজীতে লেখা ভাগবত গীতা । সেই সঙ্গে এনএইচআরসির একটা রিপোর্ট দিয়েছি । ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে যে বইটা বেড়িয়েছিল, ওই বইটা ওনার অনুমতি নিয়ে আমি উপহার দিয়েছি । পশ্চিমবঙ্গে শাসকের আইন চলে আইনের শাসন চলে না । আশা করব জগদীপ ধনকরে ধারা অব্যাহত থাকবে ।’।