এইদিন ওয়েবডেস্ক,দোহা,২০ নভেম্বর : ফুটবল বিশ্বকাপের মঞ্চকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য বেছে নিল মুসলিম রাষ্ট্র কাতার ৷ ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ‘বিতর্কিত’ ধর্মগুরু জাকির নায়েককে ৷ ইতিমধ্যে তিনি কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছেও গেছেন । স্ক্রিনমিক্স বিনোদন ম্যাগাজিন শনিবার টুইট করেছে,’২০২২ বিশ্বকাপে ধর্মীয় বক্তৃতা দেওয়ার জন্য বিখ্যাত ইসলাম প্রচারক ডঃ জাকির নায়েককে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কাতার ।’ এদিকে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চকে এভাবে ধর্ম প্রচারের জন্য ব্যবহার করায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বজুড়ে । অনেকে কাতারের এই প্রকার কট্টরপন্থী মানসিকতার সমালোচনা করেছেন ।
ইসলামি প্রচারক জাকির নায়েক মূলত ভারতের মুম্বাইয়ের বাসিন্দা । সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ করা এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে ভারতে অভিযুক্ত করা হয়েছে ওই ইসলামি ধর্মগুরুকে । তবে গ্রেফতারির আগেই ২০১৭ সালে ভারত থেকে পালিয়ে মালয়েশিয়ায় চলে যায় জাকির নায়েক । ভারতের বহু অনুরোধেও তাকে হস্তান্তর করেনি ইসলামি রাষ্ট্র মালয়েশিয়া ।
উল্লেখ্য,জাকির নায়েক তার একাধিক বক্তৃতায় ইসলামি সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করেছেন । শেষ উপায় হিসেবে আত্মঘাতী বোমা হামলাকে পর্যন্ত তিনি সমর্থন করেন । সৌদি আরবের নিষিদ্ধ মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রচারক সালমান আউদাহকে “ইসলামের মহান পণ্ডিতদের একজন” বলে মনে করেন জাকির । তুরস্ক ও কাতার এই দুই রাষ্ট্র বর্তমানে মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থক। বাহরাইন, মিশর, রাশিয়া, সিরিয়া, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারগুলি বর্তমানে এটিকে একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে।
এছাড়াও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে ইহুদিদের মারতে আত্মঘাতী হামলার পরামর্শ দিয়েছেন জাকির নায়েক । কুয়ালালামপুরে একটি বক্তৃতায় তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগানকে “একজন সাহসী মুসলিম নেতা” হিসাবে অবিহিত করেছিলেন জাকির । তার এই কট্টরপন্থী চিন্তাভাবনার জন্য যুক্তরাজ্য এবং কানাডা ২০১০ সালের জুন মাসে নায়েককে দেশে প্রবেশ করতে দিতে অস্বীকার করেছিল ।
এই প্রকার এক কট্টর ইসলামি ধর্মগুরুকে ফিফার মতো একটি জমকালো বিশ্ব ইভেন্টে আমন্ত্রণ জানানোয় সমালোচনার মুখে পড়েছে কাতার । ইউকে-ভিত্তিক ইসলামবাদ এবং মেনা বিষয়ক রাজনৈতিক ভাষ্যকার নারভানা মাহমুদ বলেছেন, ‘ইসলামি কাতারে অ-ধনী জনতার মগজ ধোলাই করার জন্য একজন উগ্র প্রচারককে নিয়ে আসার জন্য স্বাগতম । কল্পনা করুন… শুধু কল্পনা করুন.. একটি খ্রিস্টান দেশে যদি একজন খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারককে একটি আন্তর্জাতিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় তাহলে মুসলিমদের ক্ষোভ কেমন হতে পারে ।’।