প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৬ নভেম্বর : আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে কলঙ্কিত করার প্রয়াস করলে, যে হাতে প্রয়াস করবেন সেই হাত মেরে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেব।পূর্ব বর্ধমানের কালনার ডাক বিভাগের কর্মীদের উদ্দেশ্য করে এমনই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ।এই হুভকি সংক্রান্ত অডিও ভিডিও বুধবার সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়ে।যা নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলেও ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে।রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও ডাক বিভাগের কর্মীদের হুমকি দেবার ঘটনার নিন্দা করেছেন ।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা শহর বিজেপির নেতা ও কর্মিরা মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় চকবাজার এলাকার ডাকঘরের সামনে জড়ো হয়। নতুন আধার কার্ড তৈরি করতে আসা সাধারণ মানুষ ও ছাত্র ছাত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে,এমন অভিযোগ তুলে ওই বিজেপি নেতা কর্মীরা ডাকঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখায়,পথ সভাও করে।দলের এই কর্মসূচীতে যোগ দেন বিজেপির কাটোয়া সংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় ।পথ সভায় ঝাঁজালো ভাষায়
তিনি বক্তব্যও রাখেন।তাঁর সেই বক্তবের অডিও ভিডিওই ভাইরাল হয়েছে।যদিও ওই অডিও ভিডিওর সত্যতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা যাচাই করে নি ।
ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে পথসভায় দলীয় কর্মীদের মাঝে মাইক হাতে নিয়ে বক্তব্য রাখছেন বিজেপি নেতা গোপাল চট্টোপাধ্যায় । তিনি তাঁর বক্তব্যে বলছেন, ডাক ঘরের কর্মচারীরা সবাই অসৎ নয়। কিছু কিছু অসৎ লোকের জন্য সাধু লোককে বিড়ম্বনার পড়তে হয়।ডাকঘরের কর্মীদের বললো ,ওই অসৎদের নামটা আমাদের বলুন , আমরা তার সঙ্গে বোঝাপড়া করে নেব।কিন্তু কোনভাবেই মানুষের কাজ করা নিয়ে হয়রানি করা যাবে না। আজকে আপনাদের আমরা সতর্ক করতে এসেছি।আপনারা শুধরে যান। সঠিক ও ন্যায় সঙ্গত ভাবে কালনার মানুষের আধার কার্ড তৈরির কাজ করুন। নয়তো আধার কার্ড তৈরি নিয়ে কালনার মানুষকে হয়রানিতে ফেলা বিজেপি বরদাস্ত করবে না।এই বক্তব্যের পর গোপাল চট্টোপাধ্যায় কে ডাকঘর কর্মীদের কে উদ্দেশ্য করে বলতে শোনা যায়,’আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে কলঙ্কিত করার প্রয়াস করলে,যে হাতে প্রয়াস করবেন সেই হাত মেরে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেব।কোন বাদরামি , অসভ্যতা বরদাস্ত করবো না। আপনাদের চোদ্দ পুরুষের
সৌভাগ যে আমরা এইরকম মহাপুরুষ প্রধানমন্ত্রী পেয়েছি ।’
জেলা বিজেপি সভাপতি গোপাল চট্টোপায়ের সঙ্গে বুধবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই হুমকি বক্তব্য দেবার কথা স্বীকার করে নেন।গোপাল বাবুর কাছে জানতে চাওয়া হয়,কেন্দ্রীয় সরকারের আধীন ডাকঘর কর্মীদের কে উদ্দেশ্য করে এমন হমকি দেবার কি প্রয়োজন হল ?এর উত্তরে গোপালবাবু বলেন ,’পশ্চিববঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের যেসব
অফিস আছে সেখানে যে সব কর্মচারীরা কাজ করে তদের বেশিরভাগটাই বামপন্থী ও তৃণমূলের কর্মচারী সংগঠন করে । তাদের মধ্যেকার কিছু অসাধু কর্মচারী নিজেদের আখের গোছানোর জন্য সরকারের বদনাম করে। ডাক বিভাগের ওইসব অসাধু কর্মীদের সাবধান করতেই তিনি এমন হমকি দিতে বাধ্য হয়েছে বলে জানান ।
এই বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের বরিষ্ঠ নেতা স্বপন দেবনাথ বলেন,ওদের যেমন রুচি সেই ভাষাতেই বক্তব্য রেখেছে।ওদের থেকে ভাল কিছু আশা করাটাই ভুল। তবে আমি বলবো, এইসব হুমকি টুমকি না দিয়ে,বিজেপি নেতারা যদি এই রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা ও জনবিরোধী নীতির কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানায় সেটা অনেক ভালো হত ।।