প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ নভেম্বর : বিয়াল্লিশ লক্ষ টাকার কাজের টেন্ডার পাশের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন উপপ্রধান। তাই মস্তান বাহিনী পাঠিয়ে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে উপপ্রধানকে পঞ্চায়েত অফিসে তুলে আনার অভিযোগ উঠলো পঞ্চায়েতেরই এক সদসের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে ভয়ে আতঙ্কে পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দোলন সাঁতরা মাঝি প্রায় দু’মাস ঘর থেকে বাইরৈ বের হননি।শেষমেষ ভয়ভীতি কাটিয়ে তিনি মঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।আর তা জানাজানি হতেই জেলার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিরোধীরাও ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছে।
যদিও তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছেন, দলীয় ভাবে ঘটনার তদন্ত হবে । মঙ্গলকোটে অশান্তি ও অস্থিরতা নতুন কোন ঘটনা নয়।অশান্তিতে নতুন সংযোজন তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। জানা গিয়েছে,রাজ্য সরকারের গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নানা উন্নয়নমূলক কাজেরজন্য ৪২ লক্ষ টাকা দেয়। সেই টাকায় কি কি কাজ হবে,কে কে কাজ পাবে ,তা ঠিক করতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর বৈঠকে ডাকা হয় পঞ্চায়েতের সকল সদস্যদের।অভিযোগ বৈঠকের আগেই এক সদস্য ২৪ জন ঠিকাদারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে তুলে নিয়ে বসে থাকে । তা জানতে পেরে ১৯ সদস্যের অধিকাংশই পঞ্চায়েতের বৈঠকে যোগ দিতে রাজি হন নি। তার কারণে টেন্ডার অনুমোদনের বৈঠকে ’কোরাম’ হওয়া থমকে যেতে বসে।অভিযোগ তখনই,বৈঠকের কোরাম করতে পঞ্চায়েত সদস্য রুনু মাস্টারের নেতৃত্বে পাঁচজন দুষ্কৃতী উপপ্রধান দোলন সাঁতরা মাঝির কাছে পৌছেগিয়ে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তাকে পঞ্চায়েত অফিসে তুলে নিয়ে যায়।ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পার্বতী ঘোষ অভিযোগে জানান,পঞ্চায়েতের যে কোন কাজের টেণ্ডারে ঠিকাদারের কাছ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন তোলা হয়। তার থেকে তাঁকে দেওয়া হয় মাত্র .০৫ শতাংশ। বাকি টাকার পুরোটাই প্রদীপ চট্টরাজ নামে এক পঞ্চায়েত সদস্য আত্মসাৎ করে।প্রধান তাঁর অভিযোগে আরও বলেন, পঞ্চায়েতের কোন কাজ সম্পর্কে তাকে কিছুই জানানো হয়না।শুধু হুমকি দিয়ে তাঁকে বিভিন্ন কাজে সই করিয়ে নেওয়া হয়।উদ্ভুত এই সমস্যা সমাধানের জন্য আতঙ্কিত ভাল্যগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২-১৪ জন সদস্য তাঁদের দলের জেলা সভাপতির কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন।
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রুনু মাস্টার। তিনি দাবি করেন,’সদস্যরা নিজের ইচ্ছায় পঞ্চায়েতের বৈঠকে হাজির হয়ে কাগজ পত্রে সই করেছে।রুনু মাস্টারের দাবি,পঞ্চায়েতের প্রধান পার্বতী ঘোষ কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ।পঞ্চায়েত পরিচালনায় সক্রিয় ভূমিকায় থাকেন প্রদীপ চট্টরাজের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটি ।’
এইসব অভিযোগের বিষয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন,যা জানানোর তা দলের ফোরামে জানানো উচিত ছিল উপপ্রধানের । যদিও উপপ্রধান একজন মহিলা।তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন। পুলিশ বিষয়টা দেখবে।টেণ্ডারের কমিশন তোলার ঘটনা যদি সত্য হয় তাহলে দল প্রদীপ চট্টরাজের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে। এছাড়াও পুরো ঘটনার তদন্ত করবে দল।।