এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১৪ নভেম্বর : কাগজে কলমে ভারত ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করে । যদিও তার এক বছর আগেই ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি । ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর স্নেহধন্য জহরলাল নেহেরু। এযাবৎ নেহেরুকেই প্রথম প্রধানমন্ত্রী মেনে এসেছে ভারতবাসী । কিন্তু নেহেরু কি প্রকৃতই দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ? এ প্রশ্ন দীর্ঘ দিনের ।
প্রকৃতপক্ষে নেহেরু প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার প্রায় ৪ বছর আগে আপসহীন মহান বিপ্লবী নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস ভারতের মাটিতে প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন । সময়টা ১৯৪৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর । স্থান আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পোর্টব্লেয়ার । তার আগে নেতাজী ১৯৪৩ সালের ২১ অক্টোবর আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠা করেন । ওই বছরেই আজাদ হিন্দ সরকার জাপানের কাছ থেকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অধিকার অর্জন করে এবং মণিপুর ও নাগাল্যান্ড দখল করে নেয় । তারপর এই দেশের মাটিতেই নেতাজীর হাত দিয়ে উত্তোলন হয় স্বাধীন ভারতের প্রথম জাতীয় পতাকা । নেতাজিই ছিলেন এই অস্থায়ী ভারত সরকারের সর্বাধিনায়ক ও রাষ্ট্রপ্রধান । জাপান, জার্মানি, ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, বার্মা, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মাঞ্চুকুও (মাঞ্চুরিয়া) এবং চীন প্রজাতন্ত্রের মত দেশগুলি স্বীকৃতি দিয়েছিল আজাদ হিন্দ সরকারকে । অথচ ভারতের নেতাদের ঘৃণ্য রাজনীতির কারনে গৌরবজ্জল এই ইতিহাস এযাবৎ উপেক্ষিত হয়ে এসেছে ।
এবার নেতাজীর এই মহান কীর্তিকে সম্মান জানাতে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে । সম্প্রতি কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন,’নেহেরু নন,ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হলেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু । তিনিই ব্রিটিশ শাসন থেকে দেশকে প্রথম পরাধীনতা থেকে মুক্ত করে ‘আজাদ হিন্দ সরকার’ গঠন করেছিলেন ।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের পর বিজেপির অন্য নেতারাও একই কথা বলেছেন । সাংসদ রাজবর্ধন সিং রাঠোর টুইটারে লিখেছেন,’অবিভক্ত ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিংয়ের এই বক্তব্য সম্পূর্ণ সত্য ।’
এদিকে এই ঘোষণার গান্ধী-নেহেরু পরিবারের অনুগত কিছু মিডিয়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যকে খন্ডন করতে উঠেপড়ে লেগেছে । ওই সমস্ত মিডিয়া নেহেরুকে বড় করার জন্য নেতাজীর মহান কীর্তিকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । এখন দেখার নেতাজীর অবদানকে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার স্বীকৃতি দেয় কিনা ।।