এইদিন ওয়েবডেস্ক,ত্রিশুর,১৪ নভেম্বর : একটি ইসলামিক প্রতিষ্ঠান,লম্বা সাদা পোশাক এবং সাদা ফেজ টুপি পরা মুসলিম ছাত্ররা হিন্দু গুরুদের কাছ থেকে সংস্কৃতে ‘শ্লোক’ এবং ‘মন্ত্র’ পাঠ করছে । পড়ছে ভগবত গীতা-উপনিষদ- মহাভারত এবং রামায়ণ । বামফ্রন্ট শাসিত রাজ্য মধ্য কেরালার ত্রিশুর জেলায় একাডেমি অফ শরিয়া অ্যান্ড অ্যাডভান্সড স্টাডিজ (ASAS) নামে এই প্রতিষ্ঠানটি দেশ জুড়ে সম্প্রীতির একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে । কালিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত মালিক দ্বীনার ইসলামিক দ্বারা পরিচালিত ওই ইসলামিক কলেজের পড়ুয়াদের সঙ্গে অধ্যাপকের মধ্যে সমস্ত কথোপকথনও সংস্কৃতে হয় ।
এএসএএস-এর অধ্যক্ষ ওনামপিল্লী মুহাম্মদ ফয়েজি বলেছেন,সংস্কৃত, উপনিষদ, পুরাণ ইত্যাদি শেখানোর উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কে সমৃদ্ধ এবং সচেতন করে তোলা । তাই তাদের সংস্কৃত শেখানো হয় । ফাইজি জানান, দশম পাস করার পর ছাত্রছাত্রীদের আট বছর ধরে সংস্কৃতিতে ভগবদ্গীতা, উপনিষদ, মহাভারত, রামায়ণের নির্বাচিত অংশ শেখানো হয় । প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিকভাবে একটি শরিয়া কলেজ হলেও সংস্কৃতের কিছু নির্বাচিত অংশ পড়ানো হয় । তবে শুধু সংস্কৃতই নয়,কলেজে উর্দু এবং ইংরেজিও শেখানো হয় বলে তিনি জানান ।
তবে তিনি জানিয়েছেন,আট বছরের অধ্যয়নে সংস্কৃত সহ উপনিষদ, শাস্ত্র এবং বেদের গভীরভাবে অধ্যয়ন সম্ভব নয় । উল্লেখ্য,ওনামপিল্লী মুহাম্মদ ফয়েজি শঙ্কর দর্শন অধ্যয়ন করেছিলেন । তারপর থেকে তিনি কলেজের পড়ুয়াদের সংস্কৃতে আগ্রহী করে তুলতে আগ্রহী হন । তিনি মনে করেন ছাত্রদের অন্যান্য ধর্ম ও তাদের রীতিনীতি সম্পর্কেও জানা উচিত ।
কলেজের অধ্যাপক কেকে ইয়াথিন্দ্রন জানান, ফয়জি তাঁকে কলেজে পড়ানোর আমন্ত্রণ জানানোর সময় জিজ্ঞাসা করেছিলেন একটি আরবি প্রতিষ্ঠানে সংস্কৃত পড়াতে তাঁর অসুবিধা আছে কিনা । তিনি বলেন,’আমি বলেছিলাম এখানে হিন্দু-মুসলিম কোনো সমস্যা নয় । আমি পড়াতে প্রস্তুত ।’
কিছু ছাত্র সম্প্রতি মিডিয়াকে বলেছে যে আরবি ভাষার মতো সংস্কৃত শেখাও কঠিন, কিন্তু ক্রমাগত অধ্যয়ন এবং অনুশীলন করলে সময়ের সাথে সাথে এটি সহজ হয়ে যায় । তাদের কথায়,’প্রথম দিকে এটি একটি কঠিন কাজ। ঠিক যেন আরবি। কিন্তু আমরা যদি এটাকে একটানা অধ্যয়ন করি, এবং বারবার অনুশীলন করি, ঠিক আরবির মতোই, সময়ের সাথে সাথে এটা সহজ হয়ে যায় । নিয়মিত ক্লাস এবং পরীক্ষাগুলিও আমাদের এটি শিখতে সহায়তা করে ।’।