এইদিন ওয়েবডেস্ক,খুলনা(বাংলাদেশ),১৩ নভেম্বর : প্রেমের সম্পর্কের মধ্যে ধর্মের কোন জায়গা নেই, হয়তো এটাই মনে করেছিলেন এক হিন্দু তরুনী । সেই কারনে এক মুসলিম যুবককে ভালোবেসে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিলেন । কিন্তু তার জন্য যে নৃশংস পরিণতি অপেক্ষা করছে এটা তিনি স্বপ্নেও কল্পনা করেননি । বাবা-মায়ের হাজার নিষেধ উপেক্ষা করে যে প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিলেন, সেই ভালোবাসার মানুষের হাতেই নৃশংসভাবে খুন হতে হল বাংলাদেশের খুলনার সাতক্ষীরা আশাশুনির কুটের বিল এলাকার বাসিন্দা কালিপদ বাচার (Kalipad Bachar) মেয়ে কবিতা রানীকে ৷ খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে কবিতা রানীর টুকরো টুকরো দেহাংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ । গত সপ্তাহের সোমবার (৭ নভেম্বর ২০২২) বিকেলে কবিতা রানীর পরিচয় নিশ্চিত করে র্যাব-৬ । তারপর থেকেই তরুনীর প্রেমিক আবু বক্করের সন্ধান চালাচ্ছিল তদন্তকারী দল । শেষে গাজীপুর জেলার বাসন থানার চৌরাস্তা এলাকা থেকে তাকে পাকড়াও করা হয় ।
গ্রেফতারির পর ঘাতক প্রেমিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য । সংবাদিক সম্মেলন করে র্যাব-৬ এর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাক আহমেদ হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন । তিনি জানিয়েছেন,কবিতা রানী খুলনা শহরের প্রিন্স হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করতেন । গোবরচাকা ১ নম্বর সড়কে রাজু নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ৩ বছর ধরে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করছিলেন আবু বক্কর ও স্বপ্না । আবু বক্কর বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও স্বপ্নার কাছে সেই তথ্য সে গোপন করে গিয়েছিল । ভাড়া বাড়িতে আসার মাত্র ৫ দিন আগে কবিতা ও আবু বকরের পরিচয় হয় ।
মোস্তাক আহমেদ জানান,গত সপ্তাহের শনিবার (৫ নভেম্বর ২০২২) স্বপ্না ডিউটি থেকে ভাড়া ঘরে ফিরলে কোন কারনে আবুর সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা শুরু হয় । তারই মাঝে কবিতাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আবু । তারপর রান্নাঘর থেকে একটি ধারালো অস্ত্র এনে কবিতার দেহ খণ্ডবিখণ্ড করে ফেলে । কবিতার কাটা মাথাটি পলিথিনে মুড়ে ফেলে । দেহের বাকি অংশ একটি বাক্সে ঢোকায় । পরের দিন সকাল ১১ টার দিকে খুলনা মহানগরীর ১ নং গোবরচাকা ক্রস রোডের তেতুল তলায় ওই ভাড়া বাড়ি থেকে কবিতা রানীর দেহাংশগুলি উদ্ধার করে পুলিশ ।
এদিকে ওই রাতেই আবু বক্কর রূপসা নদী পার হয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয় । কিন্তু র্যাবের তৎপরতায় সে ধরা পরে যায় । গ্রেফতারের পর খুনি প্রেমিককে সোনাডাঙ্গা থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে । পরে খুনির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নগরীর গোবরচাকা এলাকার একটি নির্জন জায়গা থেকে মৃতার কাটা কব্জি উদ্ধার করে র্যাব ।।