দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৯ নভেম্বর : বছর তেইশের এক তরুনীকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের প্রস্তাব দেওয়ার ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছিল । যা নিয়ে রাজ্য জুড়ে তোলপাড় পরে যায় । শেষে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া বিধানসভার অন্তর্গত দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন পেশায় হাইস্কুল শিক্ষক শিশির মণ্ডল । এবার তাঁকে শিক্ষকতার পেশা থেকে অপসারণের দাবি তুলল ছাত্রছাত্রী ও অবিভাবকরা । বুধবার তাঁরা স্কুলের সামনে জড়ো হয়ে এই দাবিতে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন । বিক্ষোভের জেরে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে ঘটনাস্থলে কাটোয়া থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে । শেষে শিশির মণ্ডলকে অপসারণের দাবিতে প্রধান শিক্ষকের হাতে একটি স্বারকলিপি তুলে দেয় বিক্ষোভকারীরা । অগ্রদ্বীপ ইউনিয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পল্লববাবু জানিয়েছেন,অবিভাবকদের দাবিপত্রটি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেবেন । পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে স্কুল পরিচালন কমিটিতে আলোচনা করা হবে ।
জানা গেছে,অগ্রদ্বীপ ইউনিয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক শিশির মণ্ডল। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সক্রিয়ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত । দীর্ঘদিন ধরে দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন শিশিরবাবু । সম্প্রতি অডিও ও ভিডিও মিলে বেশ কিছু হোয়াটসঅ্যাপ কলের একটি ফাইল ভাইরাল হয় এলাকায় । সেই ফাইলে এক পুরুষ ও মহিলার মধ্যে কথোপকথন ছিল । মহিলার সঙ্গে পুরুষটিকে অত্যন্ত নোংরা ভাষায় কথা বলতে শোনা যায় । এমনকি মহিলাকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের প্রস্তাব পর্যন্ত দেয় ওই ব্যক্তি । কৃষ্ণনগরের একটি লজে যাওয়ার কথা বলা মেয়েটিকে ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ,ওই পুরুষ কন্ঠটি আসলে দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান শিশির মণ্ডলের । এক চাকরি প্রার্থী অল্পবয়সী মেয়ের সঙ্গে তাঁর এহেন নোংরা প্রস্তাবের নিন্দায় সরব হন এলাকার মানুষ । শেষে চাপে পড়ে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন শিশির মণ্ডল । এবার তাঁকে শিক্ষকের পদ থেকে অপসারণের দাবি উঠল ।
এদিন স্কুল খুলতেই পড়ুয়াসহ বেশ কিছু স্থানীয় বাসিন্দা শিশির মণ্ডলকে অপসারনের দাবিতে স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল একটি করে হাতে লেখা পোস্টার । তাতে লেখা,”শরীরের বিনিময়ে কাজ নয়,চাই ছাত্রী সুরক্ষা”, “ছাত্রীদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে হবে”, “চরিত্রহীন তাড়াতে সমস্ত মানুষ এক হোন” প্রভৃতি ।
স্কুলের প্রধানশিক্ষককে দেওয়া স্মারকলিপিতে অবিভাবকরা লিখেছেন,’উনি শিক্ষক সমাজের লজ্জা । এই শিক্ষকের কাছে ছাত্রছাত্রীরা নিরাপদ নয় । তাই আমাদের দাবি ওই শিক্ষককে অবিলম্বে অপসারণ করা হোক ।’।