জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),২৮ অক্টোবর : বছর কুড়ি আগে শুরুটা হয়েছিল মফস্বল থেকে। সেই সময় রক্তাক্ত মঙ্গলকোটের বুকে, যেখানকার বাসিন্দারা বোমের শব্দ শুনে ঘুমাতে যেত এবং ঘুম থেকে উঠত, নির্ভিক সাংবাদিকতা করা ছিল রীতিমত কঠিন কাজ এবং এটা করতে গিয়ে বারবার সিপিএমের হার্মাদদের অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে তাকে। ক্ষতবিক্ষত হলেও দমে যাননি। থেমে থাকেনি কলম। তৃণমূল আমলেও পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। এরপর মফস্বল থেকে কলকাতা মহানগরীতে যাত্রা। হাইকোর্টের সাংবাদিক হিসাবে আত্মপ্রকাশ এবং সেখানেও দিয়েছেন দক্ষতার পরিচয় ।
তবে শুধু সাংবাদিক হিসাবে নয় সাহিত্যের প্রতি নিজের অনুরাগ বারবার সামনে এসেছে। তার উদ্যোগে গত একযুগের উপর পল্লী কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের জন্মভিটে মঙ্গলকোটের কোগ্রামে কবির জন্মদিন পালন করে চলেছে ‘কুমুদ সাহিত্য মেলা’। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে কর্মদক্ষতার স্বীকৃত স্বরূপ তাদের প্রতি সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সোশ্যাল স্টেটাসের পরিবর্তে তার কর্মদক্ষতা গুরুত্ব পেয়েছে। এভাবেই নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন সাংবাদিক মোল্লা জসিমউদ্দীন। তার এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ভারতীয় সাংবাদিক সমিতি (আইজেএ এসএল, সল্টলেক ইউনিট), টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ সহ তিনটি সংস্থা গত ২৬ শে অক্টোবর তাকে কলকাতার রবীন্দ্র সদনে সম্বর্ধনা দেয়।
সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে জসিমের হাতে তুলে দেওয়া হয় মেমেণ্টো ও মানপত্র। এই সম্মান পেয়ে জসিম আপ্লুত হয়ে ওঠে। আবেগে তার গলা কেঁপে ওঠে। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখিকা পদ্মিনী দত্ত শর্মা, ড. সমীর শীল, বাচিক শিল্পী সেবা গুপ্ত, গায়িকা রাখি ব্যানার্জ্জী, লায়ন ম্যাগনেটস ড. অশোক রায় ও পরিমল মালাকার এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মনোশী রায়চৌধুরী (টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের সহ-সভাপতি) সহ আরও অনেকে।
আইজেএ এসএল-এর সভাপতি আশিস বসাক বলেন,’সাংবাদিকতার পাশাপাশি জসিম যেভাবে সাহিত্যের দিকে নজর দিয়েছেন সেটা সত্যিই বিষ্ময়কর। শুধু তাই নয় সমাজের বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষকে সম্মান জানানোর মধ্যে দিয়ে তার উদারতা প্রকাশ পায়। এরকম একজন ব্যক্তিকে সম্মান জানানোর সুযোগ পেয়ে আমরা গর্বিত।’ অন্য সংস্থার কর্মকর্তাদের কণ্ঠেও শোনা যায় একই সুর।
সম্বর্ধনা জানানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জসিম বললেন,’সম্মাননা পেতে সবার ভাল লাগে। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। তবে এতে দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। কাজের প্রতি বাড়তি উৎসাহ পাওয়া যায়। আমার প্রতি যারা বিশ্বাস রেখেছেন আগামী দিনেও তাদের বিশ্বাসের মর্যাদা রাখার চেষ্টা করবো ।’।