দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৮ অক্টোবর : পুলিশের চোখে ধুলো দিতে চারচাকা গাড়ির স্টেপনির ভিতরে কেজি কেজি ব্রাউন সুগার ভরে পাচার করা হত বলে জানিয়েছে ধৃত ৪ মনিপুরী মাদক কারবারি-সাইবাম রোনান কুমার সিং, ইয়েংখম প্রেমচন্দ্র সিং, লাইশ্রম বিজয় সিং ও সঙ্গম সুফম নাসির আলি । রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাক্স ফোর্স (এসটিএফ) ও কাটোয়া থানার পুলিশ মিলে ধৃতদের ম্যারাথন জেরা করে জানতে পেরেছে, মায়ানমার চীন বর্ডার এলাকায় রয়েছে ব্রাউন সুগার তৈরির একাধিক কারখানা । সেখান থেকেই মূলত আশপাশের বিভিন্ন দেশগুলিতে মাদক সরবরাহ হয় । মায়ানমারের এক মহিলা মিডিলম্যানের মাধ্যেমেই মাদক নিত ধৃত মনিপুরী মাদক গ্যাংটি । সেখান থেকে গাড়ির স্টেপনির মধ্যে ব্রাউন সুগার ভরে প্রথমে তারা মনিপুরে আনত । তারপর তা বিভিন্ন রাজ্যে মাদক কারবারীদের বিক্রি করত । মাদকের এই কারবার এতটাই লাভজনক যে অসমের সশস্ত্রবাহিনীর চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি এই পেশায় নেমে যায় সুমফাম নাসির আলি ।
জানা গেছে,ধৃত মনিপুরী মাদক কারবারিরা জেরায় জানিয়েছে দেশ জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে তাদের পাইকারী ক্রেতারা । এরাজ্যে মূলত তারা নদীয়া, হুগলি ও পূর্ব বর্ধমানে ব্রাউন সুগার সাপ্লাই দিত । তাদের অন্যতম ক্রেতা হল কাটোয়ার পঞ্চাননতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা মাদক কারবারী বাদশা মল্লিক । গত ১৫ অক্টোবর রাতে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ ও কাটোয়া থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে বাদশাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল । বেশ কিছু হেরোইনও উদ্ধার হয় তখন । আর বাদশাকে জেরা করেই ১৬ অক্টোবর রাতে দাঁইহাট মোড় থেকে একটি চারচাকা গাড়ি সমেত মনিপুরী গ্যাং এর চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । তারা বাদশাকে মাদক সরবরাহ করতে এসেছিল । কিন্তু ইতিমধ্যেই পুলিশ যে বাদশাকে পাকড়াও করেছে তা তারা টের পায়নি ।
পুলিশের জেরায় বাদশা জানায়,সে মনিপুরী গ্যাংয়ের কাছ থেকে কেজি দরে ব্রাউন সুগার কিনতো । তারপর তা নদীয়ায় প্রসেসিং করে হেরোইন বানিয়ে তা পুড়িয়া করে জেলায় জেলায় ছড়িয়ে দিত । পুলিশের অনুমান, আন্তর্জাতিক এই মাদক পাচার চক্রটি খুবই বড় মাপের । চক্রের বাকিদের সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ । এদিকে শুক্রবার ধৃত মনিপুরী গ্যাংকে কাটোয়া মহকুমা এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের শনিবার বর্ধমানের মাদক সংক্রান্ত আদালতে তোলার অনুমতি দেন ।।