প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২১ অক্টোবর :
করুণাময়ীতে চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলনকে দমাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের উপর পুলিশকে লেলিয়ে দিয়েছেন। সেই মতই এই রাজ্যের বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট শিক্ষিত বেকার ছেলে মেয়েদের উপর তান্ডব চালিয়ছে । কোনও ওয়ারেন্ট ছিল না, তা সত্ত্বেও তাঁদেরকে ধরা হয়েছে । শুক্রবার বর্ধমানের জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই অভিযোগ করলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।একই সঙ্গে তিনি বলেন,বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে যে এলাকায় পুলিশি তাণ্ডবের ঘটনা ঘটেছে তার নাম করুণাময়ী । আর বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তাই এবার বাংলা অভিধানে মমতা, করুণ, এই সব শব্দের নতুন মানে বের করতে হবে ।
শিক্ষকের চাকরির দাবিতে আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের উপর পুলিশি বলপ্রয়োগের প্রতিবাদে শুক্রবার কলকাতা সহ রাজ্যের জেলা গুলিতেও পথে নামে বিরোধীরা। পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংঘটিত হয় । প্রতিবাদে সরব হন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমও।সংবাদ মাধ্যমকে তিনি দাবি করেন,যাঁদের চাকরি পায়ার কথা তাদের চাকর না দিয়ে, সেই পদগুলিকে নিলাম করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।শিক্ষা দফতর, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, স্কুল সার্ভিস কমিশন, কোনও কোনও ক্ষেত্রে কলেজ সার্ভিস কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন চাকরি দুর্নীতি করেছে । এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। যাঁরা যোগ্য, যাঁরা পাশ করেছেন তাঁদেরকে কেন নিয়োগ করা হবে না?অন্যায়ের পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী সওয়াল করবেন, অথচ অন্যায়ের বিরুদ্ধে মানুষ কথা বলতে পারবেন না। এটা কি করে হয় । তাইতো উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গ মানুষও প্রতিবাদ আন্দোলনে সামিল হয়েছেন ।
চাকরি দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরূদ্ধেও এদিন সুর চড়ান মহম্মদ সেলিম । তিনি বলেন,এখন যিনি বিরোধী দলের নেতা, তিনি আগে ছিলেন তৃণমূলের নেতা।উনি দুই মেদিনীপুরে, মালদা, মুর্শিদাবাদে, উত্তর দিনাজপুরে সহ যেখানে যেখানে তৃণমূলের দায়িত্বে ছিলেন সেখানে সেখানে শিক্ষক নিয়োগে ও পরিবহন দফতরে দুর্নীতি হয়েছে। সেখানে তাঁর নাম যুক্ত আছে। তাঁর সম্পত্তির হদিশ করলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রতর মতো টাকার পাহাড় পাওয়া যাবে।মহম্মদ সেলিম অভিযোগ করেন,তৃণমূলের শুভেন্দু যখন পরিবহণ মন্ত্রী ছিলেন তখন চালক কন্ডাক্টর নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। এজেন্সির মাধ্যমে পরীক্ষা না নিয়ে, টাকার বিনিময়ে ওইসব চাকরি হয়েছে। এই দুর্নীতির তদন্ত হওয়া দরকার বলে মহম্মদ সেলিম দাবি করেছেন।পাশাপাশি দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপিকে গোত্রে ফেলে কটাক্ষ করেন মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন,আগে
বিজেপি মধ্যপ্রদেশে ব্যপম কেলেঙ্কারি করেছে।আদবানীর ছাত্রী হয়ে মমতা তা শিখেছে। আজকে আমাদের রাজ্যে যা যা দুর্নীতি হয়েছে,এর আগে মধ্যপ্রদেশে শিবনাথ চৌহান ও আরএসএস তা করেছে।এইসব নিয়ে প্রতিবাদ করায় এখানে পুলিশ যেমন ধরপাকড় করছে, ওখানেও ওরা (বিজেপি) একশোজন অভিযোগকারীকে খুন করেছে। কেন্দ্র ও রাজ্য দুর্নীতি ভাগাভাগি করছে বলে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম মন্তব্য করেন।।