দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৯ অক্টোবর : নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসার । চেয়েচিন্তে অতিকষ্টে ৫ জনের কোনো রকমে দু’বেলার অন্ন সংস্থান হয় । এদিকে পরিবারের দু’বছরের শিশুটি গুরুতর অসুস্থ । বাইক দূর্ঘটনার পর শিশুর মলদ্বার বন্ধ করে রেখে দিতে বাধ্য হয়েছেন চিকিৎসকরা । বিকল্প ব্যবস্থায় শিশুর জীবন কোনো রকমে টিকে আছে । এখন শিশুটির প্রাণ বাঁচাতে হলে একটি অস্ত্রপচার জরুরি । তাই সন্তানকে বাঁচাতে এখন সাহায্যের খোঁজে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের বাসিন্দা বাবর আলী ও খুশি বিবি নামে ওই দুঃস্থ দম্পতি । বুধবার তাঁরা ভাতার থানার মুরাতিপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসেন অর্থ সাহায্যের আশায় । স্থানীয় যুবক শেখ আমিরসহ কয়েকজন তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন । কিন্তু সন্তানের জটিল অস্ত্রোপচারের জন্য তা খুবই নগন্য । এখন সরকারিভাবে বা কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফ থেকে যাতে সাহায্য পাওয়া যায় সেই দিকেই তাকিয়ে আছে ওই অসহায় দম্পতি ।
কেতুগ্রামের মোরগ্রামে সড়কপথের ধারে একটি ছিটেবেরা ঘরে এক মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে অতিকষ্টে বসবাস করেন বাবর আলী ও খুশি বিবি ।বাবর আলী আগে গাছে গাছে তেঁতুল পেড়ে বিক্রি করতেন । তাতেই তাঁদের সংসার চলতো । কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগে গাছ থেকে পড়ে গিয়ে কোমর ভেঙে যায় । চিকিৎসা করে সুস্থ হলেও কোনো ভারি কাজ আর তিনি করতে পারেন না । তারপর তেঁতুল পাড়ার পেশা ছেড়ে রাস্তায় পড়ে থাকা অব্যাহত সামগ্রী কুড়িয়ে বিক্রি করে কোনো রকমে সংসার চালাচ্ছিলেন । কিন্তু ইদানিং তাঁর কোমড়ের সমস্যা ফের দেখা দিয়েছে । ফলে সেভাবে আর কাজকর্ম করতে পারেন না ।
খুশি বিবি বলেন,’এই পরিস্থিতিতে চেয়েচিন্তে কোনো রকমে সংসার চলছিল । কিন্তু বছর দুয়েক আগে আমাদের ছেলে রমজান বাড়ির সামনে রাস্তায় যখন খেলা করছিল তখন একটি মোটসাইকেল এসে তাকে ধাক্কা দেয় । দুর্ঘটনার ফলে ছেলের মলদ্বার ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল । ছেলের জটিল অস্ত্রপচার হয়েছিল । কিন্তু চিকিৎসকরা ছেলের মলদ্বার বন্ধ করে দিয়ে পেটের কাছে ছিদ্র করে মলত্যাগের বিকল্প ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন । এখন ছেলেকে বাঁচাতে ফের একটা জটিল অস্ত্রপচার করতে হবে । কিন্তু কোথায় পাবো অত টাকা ? তাই প্রতিদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি সাহায্যের আশায় ।’
শেখ আমির বলেন,’আজ কিছু আর্থিক সাহায্য ওই দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছি । বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে আরও কিছু টাকা সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি । কিন্তু এভাবে কি অস্ত্রপচারের খরচ তুলতে পারবো ? তাই বিভিন্ন মহলে অনুরোধ করছি ওই দম্পতিকে যাতে সরকারিভাবে সাহায্যের ব্যবস্থা করে দেওয়া যায় ।’।