প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ অক্টোবর :গরু,কয়লা পাচারে যুক্ত তৃণমূলের অনুব্রত মণ্ডলের মাসে আয় ছিল ৪০-৫০ কোটি টাকা। ওই টাকার বড় ভাগটা যেত । কলকাতার মূল ঠিকানায়। সময়ের অপেক্ষা মমতা সহ দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলের সব নেতাদের জেলে যেতে হবে। জনতার তাড়াও খেতে হবে’ শুক্রবার সন্ধ্যায় পূর্ব বর্ধমানের মেমারি বাসস্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত জনসভা মঞ্চ থেকে এমনটাই ঘোষনা করলেন রাজ্য সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ । পাশাপাসি এদিন তিনি তৃণমূল কংগ্রেস দল ও দলনেত্রীকে তীর্যক ভাষায় আক্রমণও করেন । যার পাল্টা জবাব দিতেও কশুর করেন নি তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ।
সিআইটিইউয়ের ১১ তম জেলা সম্মেলন এদিন থেকে শুরু হয়েছে মেমারিতে । চলবে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত।এদিন সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ প্রধান বক্তা ছিলেন সুশান্ত ঘোষ। কর্মী ও সমর্থকদের ভিড়ে ঠাসা সমাবেশ মঞ্চ থেকে সুশান্ত ঘোষ এদিন বলেন সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন ।এবার লড়াইয়ের ময়দান থেকে কেউ সিপিএমকে সরিয়ে দিতে পারবে না। পঞ্চায়েত ভোটে পূর্ব বর্ধমান জেলায় এক ইঞ্চি মাটি এবার আর সিপিএম বিনা যুদ্ধে ছাড়বে না । সিপিএম লড়বে ,সিপিএম জিতবে ।
সুশান্তবাবু দাবি করেন,তৃণমূল কংগ্রেস দলে সবাই চোর নয় । কিন্তু নেতারা সবাই চোর । তৃণমূল কংগ্রেস আপাদমস্তক দুর্নীতিত নিমজ্জিত একটি দল।পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা পর্যন্ত যে কোন ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার জন্য টিকিট পেতে গেলে টাকা দিয়ে হয় । জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য ছাড়াও তৃণমূল কংগ্রেস দলে ব্লক সভাপতি বা অন্য কোন সাংগঠনিক পদ পেতে গেলেও টাকা দিতে হয়। এমন দলের নেতারা চেয়ারে বসে টাকাতো তুলবেই। পাঁচ টাকা দিলে ৫০ টাকা তুলবে। আর সেটাই ওরা করছে। শিক্ষকের চাকরি নিয়ে এতবড় দুর্নীতি দেশের কোথাও হয় নি। এই দুর্নীতির নাটের গুরু তৃণমূলের পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মানিক ভট্টাচার্য্য ।
অনুব্রত মণ্ডল প্রসঙ্গে সুশান্ত বাবু দাবি করেন,
গরু পাচার, কয়লা পাচার সহ নানা দুর্নীতি করে বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডলের মাসে আয় ছিল ৪০-৫০ কোটি টাকা ছিল বলে তিনি জেনেছেন। ওই টাকার একটা অংশ অনুব্রত তিনি নিজের কাছে রেখে দিত। আর বেশীরভাগটাই চলেযেত কলকাতার মূল ঠিকানায়। সময়ের অপেক্ষা ,মমতা সহ দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল কংগ্রসের নেতাদের সবাইকে জেলে যেতে হবে। জনতার তাড়াও খেতে হবে বলে সুশান্ত ঘোষ এদিন মন্তব্য করেন ।
সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ এদিন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে উদ্দেশ্য করে ভয়ঙ্করী’, ‘সর্বনাশী’ বলেও মন্তব্য করেন। পাশাপাশি সুশান্ত বাবু এও বলেন, “আমি কিষেনজির নাম মুখে আনি না। ওনার (মমতা বন্দ্যোপাব্যায় )নামও নিই না।উনাকে দিদি বলতে আমার লজ্জা হয় । ওনাকে দিদি বলে ডাকলে আমার নিজের দিদিকে অপমান করা হয়। উনি হলেন ভয়ঙ্করী, সর্বনাশী। রাজ্যটাকে পিছিয়ে দিচ্ছেন।এই রাজ্যে সাড়ে পাঁচ লক্ষ সরকারী পদ ফাঁকা হয়ে রয়েছে । কৃষকদের কোন উন্নতি হয় নি ।রাজ্যের কৃষকদের মাসিক আয়ও ৮ হাজারেও পৌছায় নি।কৃষকরা আত্মহত্যা করছে শিক্ষক নিয়োগে নজিরবিহীন দুর্নীতির জন্যে রাজ্যের মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে বলে সুশান্ত ঘোষ মন্তব্য করেন ।
যদিও সুশান্ত ঘোষের এইসব মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূলের কংগ্রেসের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু। তিনি বলেন,’মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করার পরিনাম বিধানসভা ভোটে পেয়েছে সিপিএম। বাংলার মানুষ ওদের শূন্য করে দিয়েছে। ওরা যতই লাফাক পঞ্চায়েত ভোটেও মানুষ সিপিএমকে যোগ্য জবাব দিয়ে দেবে ।’।