এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০৭ অক্টোবর : বেশ কয়েক বছর ধরে নিজের ধর্মের রীতিনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন বাংলাদেশের শরীয়তপুরের আংগারিয়া ইউনিয়নের সিংগারিয়া গ্রামের বাসিন্দা মেধাবী যুবক রাজীব মুন্সী । প্রকাশ্যেই ইসলাম ধর্মের সমালোচনায় মুখর হতেন । বিষয়টি মেনে নিতে পারতেন না কট্টরপন্থী বাবা সেলিম মুন্সী । তিনি ছেলেকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ধর্মে মতি আনার চেষ্টা করেছিলেন । কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন । ইতিমধ্যে কর্মসূত্রে জার্মানি চলে যান রাজীব । আর সেখানে বসেই নিজের ধর্মের সমালোচনা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আকছার পোস্ট করতেন ।
বুধবার রাজীব তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নবী হযরত মুহাম্মদকে কটুক্তি করে একটি ভিডিও পোস্ট করেন । আর সেই ভিডিও নজরে পড়তেই ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন সেলিম মুন্সী । বৃহস্পতিবার শরীয়তপুরের নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে গিয়ে রীতিমতো একশ টাকার নন জুডিশিয়াল স্টাম্প পেপারে লিখিতভাবে ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র করার কথা ঘোষণা করেন সেলিম মুন্সী । শুধু তাইই নয়, ছেলের ভিডিওর কথা তিনি পুলিশকেও জানান । ভিডিওটি দেখার পর পালং মডেল থানার পুলিশ রাজীবের বিরুদ্ধে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রজু করেছে বলে জানা গেছে ।
জানা গেছে,ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন রাজীব মুন্সী । ঢাকার তিতুমীর কলেজ থেকে তিনি স্নাতক উত্তীর্ণ হন । কলেজে তাঁকে স্পষ্ট বক্তা এবং প্রতিবাদী মানসিকতা সম্পন্ন হিসাবে চিনতো সকলে । কলেজ জীবন থেকেই তার ভেতর ইসলাম বিরোধী মনোভাব প্রকাশ পাচ্ছিল । কট্টর মৌলবাদ নিয়ে প্রায়ই প্রতিবাদে সরব হতেন রাজীব । অন্যদিকে রাজীবের বাবা সেলিম মুন্সীসহ পরিবারের বাকি সদস্যরা কট্টরপন্থী মানসিকতা সম্পন্ন হিসাবে এলাকায় পরিচিত । ফলে রাজীবের বিদ্রোহী মানসিকতা নিয়ে তাঁরা স্বজাতীয়দের সামনে বিব্রত হতেন । রাজীবকে তাঁরা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন অসংখ্যবার । কিন্তু কাজের কাজ হয়নি । এদিকে জার্মানিতে একটি কাজ জুটিয়ে ফেলেন মেধাবী রাজীব । আর তারপর থেকেই তাঁর সমালোচনায় ভাষা আরও কঠোর হতে শুরু করে । শেষে ইসলামের আরাধ্যকেই আক্রমণ করে নিজের পরিবারের বিরাগভাজন হতে হল তাঁকে ।
রাজীবের বাবা সেলিম মুন্সী বলেন, ‘ভিডিওতে আল্লাহ ও মহানবীকে (স.) নিয়ে বাজে কথা বলেছে রাজীব । এতে আমার খারাপ লেগেছে। তাই আমি তাকে ত্যাজ্য পুত্র করেছি। আজ থেকে সে আমার ছেলে নয় ।’ যদিও ত্যাজ্যপুত্র করার বিষয়ে রাজীবের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি ।।