প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৪ অক্টোবর : রাজ আমলের রীতি মেনে মহা নবমীর দিন দেবীজ্ঞানে ৯ কুমারীর পুজো হল বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ।এখানে নবমী তিথিতে নয়জন কুমারীকে দেবী দুর্গার নয়টি রুপে পুজো করা হয়ে থাকে। এই রুপ গুলির মধ্যে অন্যতম হল কালিকা মালিনী,সুভগা,কব্জিকা,কালসন্দর্ভা ও উমা । কোভিড বিধি শিথিল হতেই কুমারী পুজো দেখার জন্য মঙ্গলবার সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ভক্তদের ভিড উপচে পড়ে।
বর্ধমান রাজ পরিবারের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দির হল রাঢ়বঙ্গের ঐতিহাসিক মন্দির গুলির অন্যতম । বর্ধমানের বাহির সর্বমঙ্গলা অঞ্চলে বাস করা চুনুরীদের কাছ থেকে পাওয়া কষ্টি পাথরের অষ্টাদশী ভূজা দেবী মূর্তি বর্ধমানবাসীর অধিষ্ঠাত্রী দেবী। ১৭৪০ সালে রাজা কীর্তি চাঁদ অষ্টাদশী দেবী মূর্তিকে প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকে সর্বমঙ্গলা নামেই দেবী পূজিত হয়ে আসছেন । পরবর্তীকালে মহতাব চাঁদ দেবীর মন্দির তৈরী করেন। রাজা নেই, রাজ আমলও আর নেই ।তা বলে দেবীর বন্দনায় কোন খামতি পড়েনি । রাজ আমলের রীতি মেনে এখনও পুজোর দিনগুলোয় নিষ্ঠার সঙ্গে সর্বমঙ্গলা মায়ের পুজো হয়ে আসছে। নিয়ম নিষ্ঠায় কোন খামতি পড়ে নি। অন্যান জায়গায় অষ্টমীতে কুমারী পুজো হলেও যেহেতু সর্বমঙ্গলা মন্দিরে নবরাত্রীর পুজো হয় তাই এখানে নবমী তিথিথেই কুমারী পুজো হয়ে আসছে।
বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ৯ কুমারী মায়ের পূজো দেখুন :–
রাজ আমলের অবসান হবার পর তৎকালীন মহারাজা উদয় চাঁদ ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করেন। সেই ট্রাস্টি বোর্ডের হাতেই তিনি প্রাচীন মন্দিরটি পরিচালনার দায়িত্ব দেন ও তার পর থেকে এখনো পর্যন্ত সেই ট্রাস্টি বোর্ডই এই মন্দিরের পুজো অর্চনার যাবতীয় দায়দায়িত্ব সামলে আসছে । জেলার বাইরে ভিন জেলার বহু ভক্ত এদিন নয় কুমারীর পুজো দেখতে সর্বমঙ্গলা মন্দিরে উপস্থিত হন। ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘একেবারে নিয়ম মেনেই এখানে নব কুমারী পুজো হয়।কোভিডের জন্য গত বছর শুধুমাত্র একজন কুমারীকে পুজো করা হয়েছিল।কিন্তু এবার ৯ জন কুমারীকেই পুজো করা হচ্ছে। পুজো শেষে এদিন মালসায় করে ভোগ বিতরণ করা হয় ।’।