এইদিন ওয়েবডেস্ক,পঞ্চগড়(বাংলাদেশ),২৬ সেপ্টেম্বর : বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের হাতিডুবা ছত্রশিকারপুর গ্রামের বাসিন্দা রবিনচন্দ্র রায় হারিয়েছেন পরিবারের ৪ জন সদস্যকে । রবিনের স্ত্রী, ৩ বছরের শিশুসন্তান বিষ্ণু,ছোট ভাই কার্তিক রায়ের স্ত্রী লক্ষ্মী রানী (২৫) ও দাদা বাবুল রায়ের ছেলে দীপঙ্কর (৩) রবিবারে করতোয়া নদীতে নৌকা ডুবিতে প্রাণ হারিয়েছেন । ছেলে আর ভাইপোর নিথর শরীর দুটি বুকে জড়িয়ে মর্মস্পর্শী আর্তনাদ করে পেশায় ইঁট ভাটার কর্মী রবিনচন্দ্র বলেন,’ছেলে দুটো পুজোর জামা প্যান্ট কিনে দেওয়ার জন্য খুব বায়না করছিল । কাছে টাকাপয়সা ছিল না তাই কিনে দিতে পারিনি । বাচ্চাগুলোর নতুন জামাপ্যান্ট কেনার জন্য টাকা জোগাড় করেছিলাম । এখন সেই টাকায় তাদের সৎকারে খরচ হবে ভাবিনি । আমার সব শেষ হয়ে গেল।’ দুর্গোৎসবের আবহের মধ্যেই স্ত্রী শিশুসন্তানসহ পরিবারের ৪ জনকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল রবিন চন্দ্র । শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার ।
ওই নৌকাতেই ছিল ১৫ বছরের কিশোর রনি । সে বলে,’নদী থেকে সাঁতরে পাড়ে উঠে ফের আমি জলে ঝাঁপিয়ে পড়ি । তারপর ৩ জনকে টেনে পাড়ে তুলেছি । তার মধ্যে ছিল বিষ্ণু । পরিবারের সদস্যরা যখন শিশুটিকে বুকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করছিল তখনো সে নড়াচড়া করছিল । কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয় ।’ আফশোস করে রনি বলে,’জল থেকে উদ্ধারের পরেই যদি বিষ্ণুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হত তাহলে হয়তো বেঁচে যেত ।’
রবিবার মহালয়ার দিন সতীপীঠ বদেশ্বরী মন্দিরে ছিল বিশেষ অনুষ্ঠান । প্রচুর শ্রদ্ধালু মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন । মাড়েয়া ইউনিয়নের আওলিয়া ঘাট থেকে একটি ভিড়ে ঠাসা নৌকায় উঠেছিল রবিন চন্দ্র রায়ের পরিবারের সদস্যরা । কিন্তু মাঝ নদীতে আসতেই নৌকাটি দুলতে শুরু করে । আর তার অল্প সময়ের মধ্যেই ঢুবে যায় নৌকাটি । দূর্ঘটনার সময় ৭০-৮০ জন যাত্রী ছিল নৌকায় । তাদের মধ্যে ২৪ জনের মৃত দেহ উদ্ধার হয় ।।