জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,বর্ধমান,২২ সেপ্টেম্বর :
গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হলো গণমাধ্যম। স্পষ্টভাবে বলা যেতে পারে সংবাদ মাধ্যম। আগে সংবাদ মাধ্যম বলতে মূলত প্রিণ্ট মিডিয়াকে বোঝানো হতো। ধীরে ধীরে ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া অর্থাৎ সরকারি বা বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। খবরের উপর নির্ভর করে একের পর এক বেসরকারি চ্যানেল গড়ে ওঠে। ইণ্টারনেটের সহজলভ্যতার জন্য বহু ‘নিউজ পোর্টাল’ গড়ে ওঠে। বর্তমানে কেবলমাত্র স্হানীয় খবর দেওয়ার জন্যও বেশ কিছু পোর্টাল দ্যাখা যায়। এদের অনেকের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। ফলে চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রয়োজন হয় প্রচুর সাংবাদিকের। প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছাড়াই অনেকেই সাংবাদিক হিসাবে যথেষ্ট যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। পেশা হিসাবে সাংবাদিকতার কাজে যেমন একটা থ্রিলিং আছে তেমনি বিভিন্ন দিকও আছে যার অন্যতম বিষয় হলো ফটোগ্রাফি। কখনো কখনো নির্বাক ‘ছবি’ সবাক হয়ে অনেক কথা বলে দেয়। এবার সেই ফটোগ্রাফি বিষয়ক একদিনের বিশেষ কর্মশালা আয়োজিত হলো বর্ধমানে।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর ২০২২) বর্ধমান মহারাজধিরাজ উদয়চন্দ মহিলা কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের উদ্যোগে মহাবিদ্যালয়ের এ.পি.জে. আব্দুল কালাম অডিটোরিয়ামে এই কর্মশালা আয়োজিত হয়। এই কর্মশালায় কলেজের জার্নালিজম বিভাগ সহ অন্যান্য বিভাগের ছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারাও অংশগ্রহণ করেন। ‘ফটোগ্রাফি অ্যাজ এ কেরিয়ার’ শীর্ষক এই কর্মশালায় ফটোজার্নালিজম এবং পেশাদার ফটোগ্রাফির বিভিন্ন দিক নিয়ে হাতে-কলমে আলোচনা করা হয়। খবর করতে গিয়ে একজন চিত্র সাংবাদিক কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেবে এবং কিভাবে ছবি তুললে সেটা অর্থবহ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে সেটা বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
অতিথি বক্তা হিসেবে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন পেশাদার ফটোগ্রাফার প্রিয়াঙ্কা রায় এবং সাংবাদিক সুজাতা মেহেরা। এছাড়াও এদিনের ওয়ার্কশপে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপিকা মৈত্রী শী , বর্তমান প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় তথা দক্ষ একটি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক সুপ্রকাশ চৌধুরী, চিত্রগ্রাহক রণজিৎ দে সহ আরও অনেকেই। প্রত্যেকেই শিক্ষার্থীদের সামনে তাদের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেন। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে কর্মশালার শেষে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেকের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে কর্মশালার উদ্বোধন করেন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. বাণীব্রত গোস্বামী। সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী সায়ন্তনী ব্যানার্জি বলেন- ক্লাসরুম শিক্ষার পাশাপাশি এই ধরণের হাতে-কলমে শেখার কর্মশালা আমাদের মত শিক্ষানবীশদের খুবই কাজে লাগবে। তাকে সমর্থন করে নাজমুন্নেসারা সহ অন্যান্যরা।
মহাবিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ঋষিগোপাল মণ্ডল জানান,বর্তমানে পেশা হিসাবে সাংবাদিকতা যথেষ্ট জনপ্রিয় এবং বহু শিক্ষিত বেকার ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করে। পেশাদার সাংবাদিক হওয়ার জন্য দরকার যথাযথ শিক্ষা। এটি বিষয় হিসাবে ধীরে ধীরে বিভিন্ন মহাবিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে। তাই আমরাও সাংবাদিকতা শিক্ষার পাশাপাশি ভবিষ্যত পড়ুয়াদের কেরিয়ার গঠনে সুবিধা হয় এমন আরও পেশামুখী ওয়ার্কশপ ও কর্মসূচির আয়োজন করার পরিকল্পনা করেছি। আশাকরি এরফলে শিক্ষার্থীদের উপকার হবে ।।