এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৩ সেপ্টেম্বর : আজ মঙ্গলবার বিজেপির ‘নবান্ন অভিযান’ । তবে এই অভিযানের অনুমতি দেয়নি পুলিশ । আর পুলিশের অনুমতির তোয়াক্কা না করে এবং লাগাতার ভারি বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ‘চোর ধরো জেল ভরো’ শ্লোগান তুলে রাজ্যের জেলাগুলি থেকে লাখ লাখ বিজেপি কর্মী হাওড়ামুখী হয়েছেন । এদিন ভোর থেকেই হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনে তিল ধারণের জায়গা ছিল না । উত্তরবঙ্গ থেকে আসা ট্রেনগুলির যাত্রীদের বেশিরভাগই জানান তাঁরা নবান্ন অভিযানে যোগ দিতে এসেছেন । এছাড়া দক্ষিণবঙ্গের জেলা বর্ধমান, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকেও ট্রেন, বাস ছাড়াও চারচাকা গাড়ি করে এসেছেন বিজেপি কর্মীরা । দলীয় কর্মীদের স্বাগত জানাতে হাওড়া রেলস্টেশনে উপস্থিতি হয়েছিলেন খোদ রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ।
এদিকে বিজেপির নবান্ন অভিযান ঠেকাতে পুলিশের মধ্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে । জারি করা হয়েছে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা । হাওড়া শহরের বিভিন্ন প্রান্ত কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে । নবান্নের নিরাপত্তা ব্যবস্থার নজরদারিতে রয়েছেন বিশেষ কমিশনার দময়ন্তী সেন। শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তার তদারকিতে রয়েছেন দু’জন করে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার । এছাড়া ১৮ জন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক,৩২ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার, ৬২ জন ইনস্পেক্টরকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । নবান্নমুখী বিজেপির মিছিল ঠেকাতে রাখা হয়েছে ৫ টি জলকামান, দু’টি বজ্র। পাশাপাশি ড্রোনের সাহায্যে চলছে নজরদারি । নবান্নের আশপাশে পাঁচ কিলোমিটার এলাকা কার্যত দুর্গে পরিণত করেছে রাজ্য পুলিশ । কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় জারি করা হয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা ।
এদিকে বিজেপির ‘নবান্ন অভিযান’ ঘিরে পুলিশের এই অতি সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এবং রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । শুভেন্দু ফেসবুকে লিখেছেন,’সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক কর্মসূচিকে মমতা পুলিশ যুদ্ধক্ষেত্রের রূপ দিয়েছে। সাঁতরাগাছিতে স্টিলের প্রাচীর মমতা পুলিশের ভীরুতার প্রতীক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে রাখবেন এই ‘গণতন্ত্রের ঢেউ’ – এর কাছে কোন অগণতান্ত্রিক প্রাচীর দাঁড়াতে পারবে না, শুধু তাই নয় এটি খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে যাবে। চলো নবান্ন চলো ।’
রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও পুলিশের অতি সক্রিয়তার প্রতিবাদ করে বলেছেন,’সারা রাজ্যে দিদির পুলিশ বিজেপিকে আটকাতে যেভাবে তৎপরতা দেখালো, এই তৎপরতা যদি সাধারণ মানুষের জন্য দেখাতো তাহলে আজ এত মানুষ খুন হতো না, এক মাসে ৪৫ জন বাংলার মেয়েকে ধর্ষিত হতে হতো না। মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের গনতন্ত্র হত্যাকারী দল দাস পুলিশ প্রশাসনকে জানাই ধিক্কার। মানুষ এর জবাব দেবে ।’
যদিও এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় নেই । তিন দিনের জন্য মেদিনীপুর জেলা সফরে গেছেন । সোমবার বিকেলই খড়গপুরে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী ।।