এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট,২৭ জানুয়ারী : মঙ্গলকোটে তৃণমূলের এক নেতাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল । মৃতের নাম সঞ্জিত ঘোষ(৩৮) । তাঁর বাড়ি মঙ্গলকোট থানার নিগন গ্রামে । তিনি গ্রামের 197 নম্বর বুথের বুথ সভাপতি ছিলেন । অভিযোগ,মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ কৈচরের ব্লক কার্যালয়ে কর্মসূচি সেরে বাইক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নিগনের কাছে কিছু দুষ্কৃতি তাঁর পথ আটকায় । তারপর ওই দুষ্কৃতিরা লাঠি,রড দিয়ে তাঁকে ব্যাপক মারধর করে । কিছুটা পিছনে আসছিলেন ইব্রাহিম খান নামে আর এক তৃণমূল নেতা ৷ তাঁর উপরেও দুষ্কৃতিরা চড়াও হয় । তবে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর জখম হন সঞ্চিত ঘোষ ।
তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে আনা হয় । পরে সেখান থেকে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । কিন্তু ওইদিন সন্ধ্যাতেই মৃত্যু হয় সঞ্জিত ঘোষের । এই ঘটনায় বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস । যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি ।
এদিন মৃত কর্মীর পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে নিগন গ্রামে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা । তিনি অভিযোগ তোলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর প্ররোচনাতেই এই ঘটনা ঘটেছে । প্রসঙ্গত, সোমবার রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি তথা সাংসদ সৌমিত্র খাঁ নিগনের হাটতলায় একটি জনসভায় যোগ দেন। ওই সভা থেকে তিনি কিছু উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের ।
চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, ‘আগের দিন সৌমিত্র খাঁ এসেছিলেন । তিনি মানুষদের প্ররোচিত করে গিয়েছিলেন । ঠিক তার পরেই এই ঘটনা ঘটে ।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘সৌমিত্র খাঁ, দিলীপ ঘোষরা সারা রাজ্য জুড়ে একই কালচার আনার চেষ্টা করছেন । তাঁরা বাংলার ঐতিহ্য,কৃষ্টিকে নষ্ট করার চেষ্টা করছেন । বাংলার চারিদিকে অশান্তির বাতাবরন সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন । বিজেপি যা নোংরামি করছে আমরা তার ধিক্কার জানাই । এর উত্তর তার যথা সময়েই পেয়ে যাবে ।’
অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমানে বিজেপির সাংগঠনিক কাটোয়া জেলার সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘নিগনের যে তৃণমূল নেতা খুন হয়েছেন উনি একজন সমাজবিরোধী ছিলেন । এলাকার মানুষের উপর অত্যাচার করতেন ।’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘তৃণমূলের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারনেই এই ঘটনা ঘটেছে । এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই ।’
বুধবার মৃত তৃণমূল নেতার দেহের ময়নাতদন্তের পর দেহটি গ্রামে আনা হয় । মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে । এদিন ঘটনাস্থলে আসেন পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। আপাতত ৬ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দোষীদের খোঁজে এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’ এদিকে এই ঘটনার জেরে উত্তেজনা থাকায় টহল দিচ্ছে পুলিশবাহিনী ।।