এইদিন ওয়েবডেস্ক,বারাণসী,১১ সেপ্টেম্বর : আগামী কাল সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর ২০২২) জ্ঞানবাপী মামলার (Gyanvapi Mosque case) শুনানি হতে চলেছে । রাখি সিং,লক্ষ্মী দেবী,সীতা সাহু, মঞ্জু ব্যাস ও রেখা পাঠক এই ৫ মহিলা ইতিহাস ও পুরাণ থেকে বহু তথ্য তুলে ধরে জ্ঞানবাপীতে পূজার অধিকার চেয়েছেন আদালরের কাছে । জ্ঞানবাপী কমপ্লেক্সে অবস্থিত শৃঙ্গার গৌরী ও দেবতাদের নিয়মিত দর্শন-পূজার জন্য ১৯৯১ সালের আগের পরিস্থিতির মতো স্থানটি হস্তান্তর করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা । সম্ভবত সোমবার হতে চলেছে ভারতের ইতিহাসের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন ।
মামলাকারী পাঁচ মহিলা আবেদনে জানিয়েছেন, ত্রেতাযুগে দশাশ্বমেধ ঘাটের কাছে স্বয়ং ভগবান শিব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আদিশেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের একটি বিশাল মন্দির ছিল । ৯১৩০ দাগের ওই জায়গাতেই বর্তমানে রয়েছে জ্ঞানবাপি মসজিদ । এছাড়া পুরানো মন্দির চত্বরে মা শ্রিংগার গৌরী, ভগবান গণেশ, ভগবান হনুমান, নন্দীজীসহ বহু দেবদেবী বিরাজমান ছিলেন । ১১৯৩-৯৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বেশ কয়েকবার মন্দিরটির ক্ষতি করেছিল মুসলিম আক্রমণকারীরা । যদিও পরে ফের সংস্কার হয় মন্দিরের । এরপর ১৫৮৫ খ্রিস্টাব্দে গুরু নারায়ণ ভট্টের নির্দেশে ওই স্থানে একটি মন্দির নির্মান করিয়েছিলেন জৌনপুরের তৎকালীন গভর্নর রাজা টোডরমল । একটি কেন্দ্রীয় গর্ভগৃহ নিয়ে গঠিত আটটি মণ্ডপ দ্বারা বেষ্টিত ছিল ওই মন্দিরটি ।
কিন্তু ১৬৬৯ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বেশ্বরের প্রাচীন মন্দিরটি আংশিকভাবে ভেঙে ফেলার পর সেখানে ‘জ্ঞানবাপি মসজিদ’ নির্মান করিয়েছিলেন আওরঙ্গজেব । পরে ইন্দোরের রানী অহিল্যাবাই হোলকার ১৭৮০-৯০ সালে ভগবান শিবের একটি মন্দির তৈরি করেছিলেন। পুরানো মন্দিরের পাশে একটি শিব লিঙ্গ স্থাপন করেন তিনি । রানী অহল্যাবাই কর্তৃক নির্মিত মন্দিরটিকে “নতুন মন্দির” এবং শ্রী আদি বিশ্বেশ্বর মন্দিরকে ‘পুরানো মন্দির’ বলা হত । এছাড়া তথাকথিত জ্ঞানবাপি মসজিদের পশ্চিম দেয়ালের পিছনে, দেবী শ্রিংগার গৌরীর একটি মূর্তি রয়েছে, যা প্রাচীনকাল থেকে বিদ্যমান এবং অবিরাম পূজা করা হয় ।
বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ও প্রধান ডঃ এএস আলতেকারের লেখা ‘বেনারসের ইতিহাস’ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে আবেদনে বলা হয়েছে,আওরঙ্গজেব কোনো ওয়াকফ নির্মাণ করেননি । তাই কোনো ধর্মীয় উদ্দেশ্যে জমি ব্যবহার করার অধিকার মুসলমানদের নেই ।
গত ২৪ আগস্ট বারাণসী জেলা আদালত জ্ঞানবাপি মামলার শুনানি হয় । আদালত ১২ সেপ্টেম্বর শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন । জ্ঞানবাপি মসজিদ মামলায় হিন্দু পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বিষ্ণু শঙ্কর জৈন জানিয়েছিলেন, তিনি আশাবাদী যে রায় তাঁদের পক্ষেই যাবে । এখন দেখার বিষয় বিচারক কাদের পক্ষে রায় দেন ।।