প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১১ সেপ্টেম্বর : সদস্য সংখ্যা বাড়াতে বিজেপির মতো বামেরাও আঁকড়ে ধরছে ’ডিজিটাল’ মাধ্যমকে। ’মিস কলের’ মাধ্যমে বিজেপি তাদের পার্টির সদস্যা সংখ্যা বাড়ানোর পন্থা নিয়েছিল।আর এবার সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই ’QR কোড ’ মাধ্যমে তাদের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর পন্থা নিল।যাকে কটাক্ষ করে টিএমসিপি নেতারা বলছেন,’বামেরা হল বিজেপির ভাব শিষ্য।তাই সংগঠন তৈরির কায়দা কানুনও তাদের একইরকম হবে,এটাই স্বাভাবিক ।’
২১ শের বিধানসভা ভোটে শূন্য হয়ে গেলেও হাল ছাড়েতে নারাজ সিপিএম নেতৃত্ব।আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট ও ২৪ শের লোকসভা ভোটে ঘুরে দাঁড়াতে তারা এখন থেকেই মরিয়া হয়ে রাজনীতির ময়দানে ঝাপিয়ে পড়েছে।দলের হয়ে বড় ভূমিকা পালনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে যুব সংগঠন
ডিওয়াইএফআই (DYFI) ও ছাত্র সংগঠন এসএফআই(Sfi)।রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জনমত সংঘটিত করার জন্য
এসএফআই তাদের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর উপর
বিশেষ জোর দিয়েছে। এসএফআই এর সদস্য হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারা পোস্টারও তৈরি করেছে। সেই পোস্টারেই এখন ছয়লাপ পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর সহ গোটা জেলার বাজার,হাট, বাসস্ট্যান্ড চত্ত্বর ।ওই পোস্টারে বড় বড় অক্ষরে আবেদন জানিয়ে লেখা রয়েছে, ’এসএফআই (SFI) এর সদস্য হও’।তার ঠিক নিচেই দেওয়া রয়েছে একটি ’কুইক রেসপন্স কোড’। সেই কোডের নিচে আবার লেখা রয়েছে,’স্ক্যান কিউ আর (QR) কোড- জয়েন এসএফআই’ । আর এই পোস্টার ঘিরেই শুরু হয়ে গিয়েছে শাসক বিরোধী তর্জা ।
এমন পোস্টার প্রসঙ্গে এসএফআই এর জেলা কমিটির সদস্য তথা জামালপুর ব্লকের এসএফআই সম্পাদক নীলকমল পাল বলেন,’হ্যাঁ-কিউআর (QR) কোড দেওয়া পোস্টারের মাধ্যমে আমরা এসএফআইয়ের সদস্য হওয়ারই আহ্বান জানিয়েছি । কারণ আমরা পথেও আছি, হেঁটেও আছি নেটেও আছি। আমারাই ছাত্র বিরোধী নয়া শিক্ষা নীত, ক্যাম্পাসে গণতন্ত্র ফেরাণোর দাবি সহ রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছি।সেই লড়াইয়ের সাথী হওয়ার জন্য সবাইকে কিউআর (QR)কোড স্ক্যান করে এসএফআইয়ের সদস্য হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।সদস্য বাড়ানোর এই পন্থাকে বিজেপির অনুকরণ বলে মানতে চান নি নীলকমল বাবু।উল্টে তিনি দাবি করেন,বিজেপি পার্টিটাই সম্পূর্ণ ভাবে ’মিস কলের’ মাধ্যমে চলে। কিন্তু ,সেই পথে বামেরা হাঁটে না ।
সদস্যসংখ্যা বাড়ানো জন্য এসএফআই এর কিউআর কোড ব্যবহারের পন্থাকে বিলম্বিত বোধদয় বলে কটাক্ষ করেছেন, জেলা বিজেপির সহসভাপতি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী । তিনি বলেন, বাম আমলে সিপিএম ও তাদের সমস্ত শাখা সংগঠন কম্পউটার সহ ডিজিটাল মাধ্যমেরই বিরোধীতা করে গেছে।একমাত্র কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দেশে ডিজিটাল ব্যবস্থাকে উন্নতির শিখরে পৌছে দিয়েছে।আর এখন সেই বামেরাই নকল করছে বিজেপিকে। মিস কলের মাধ্যমে বিজেপি সদস্য সংগ্রহের পন্থা নিয়েছিল। সেটকেই অনুসরন করে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই এখন ডিজিটাল কিউআর (QR) কোড মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। রামকৃষ্ণ বাবু এও বলেন,এইসব করে বামেরা লাভের লাভ কছু করতে পরবেনা বলে তিনি মনে করেন না ।
সংগঠনের সদস্য বাড়ানোর এইসব ডিজিটাল পন্থা অবলম্বন নিয়ে বাম ও বিজেপি দু’পক্ষকেই কটাক্ষ
করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) জেলা সভাপতি সেখ সাদ্দাম। তিনি দাবি করেন, ’বামেরা হল বিজেপির ভাব শিষ্য। দুটো দলই জন বিচ্ছিন্ন ।তাই সংগঠন তৈরির কায়দা কানুনও এই দুই দলের একইরকম হবে,এটাই স্বাভাবিক । তৃণমূল কংগ্রেস দল ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ মানুষের মাঝে থেকে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলে বলেই মিস কল বা কিউআর (QR) কোড মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহের প্রয়োজন হয় না ।’।