এইদিন ওয়েবডেস্ক,০১ সেপ্টেম্বর : চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে গণবন্দি অভিযানে আনুমানিক ১০ লক্ষ উইঘুর এবং অন্যান্য জাতিগত মুসলিম গোষ্ঠীকে কারাগার পাঠিয়েছে বেইজিং । কথিত “প্রশিক্ষণ কেন্দ্র”-এর নামে সেখানে চলছে নৃশংস অত্যাচার । খুন, যৌন উৎপীড়ন তো আছেই,তার পাশাপাশি জোর করে বন্ধ্যাত্বকরণের ফলে ব্যাপক হারে কমেছে মুসলিম সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা । বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট এনিয়ে ৪৮ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন পেশ করেছেন । তিনি চীনে মুসলিমদের উপর অত্যাচারকে “গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন” হিসাবে বর্ণনা করেছেন । মিশেল তাঁর চার বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক মিনিট আগে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন ।
মিশেল ব্যাচেলেট গত মে মাসে চীন সফর করেছিলেন । সফরকালে মুসলিম অধ্যুষিত চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশের প্রাক্তন বন্দীদের সাথে কথা বলেন । প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং যাকে বৃত্তিমূলক কেন্দ্র বলে অভিহিত করেছে তার ভিতরে আদপে যৌন শোষণসহ অমানবিক নির্যাতন চলছে । কিছু ‘নির্যাতনের নিদর্শন’ও উদ্ধৃত করা হয়েছে প্রতিবেদনে । তাতে বলা হয়েছে,এই ধরনের গোষ্ঠীগুলির “স্বেচ্ছাচারী এবং বৈষম্যমূলক আটক” করে মুসলিদের মৌলিক অধিকারগুলি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে । এটিকে “মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ” বলে বর্ণনা করে জানানো হয়েছে,ঠিক কতজন মানুষকে বন্দী শিবিরে আটক করা হয়েছিল তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি । তবে তা ১০ লক্ষ এবং ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালে সংখ্যাটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ছিল বলে দাবি করা হয়েছে । পরিশেষে জরুরি আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে ।
এদিকে এই প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন । বেইজিং দাবি করেছে, চীনের সুনাম নষ্ট করার জন্য পশ্চিমি দেশগুলি অপপ্রচার চালাচ্ছে । চীনের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখনও এই প্রতিবেদনটি দেখিনি, তবে আমরা এই ধরনের প্রতিবেদনের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছি, আমরা মনে করি না এটি কারও জন্যই কোন উপকারে লাগবে । আমরা এই ধরনের প্রতিবেদনের দৃঢ় বিরোধিতা করছি ।’ “তথাকথিত জিনজিয়াং ইস্যু” চীনের স্থিতিশীলতাকে ক্ষুণ্ন করা এবং এর উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে একটি মনগড়া বিষয় বলেও তিনি দাবি করেছেন ।।
ছবি : সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়া ।