প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,৩১ আগষ্ট : রীতিমতো টেবিল চাপড়ে আঙুল উঁচিয়ে কলেজ শিক্ষকদের হুমকি শাসানি দেবার অভিযোগ উঠলো এক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতার বিরুদ্ধে । অভিযুক্ত ওই টিএমসিপি নেতার নাম বিট্টু মল্লিক । তিনি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি।জামালপুর কলেজে গিয়ে তিনি যে কায়দায় শিক্ষকদের হুমকি শাসানি দিয়েছেন তা জেনে যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন টিএমসিপির জেলা নেতৃত্ব।প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বিরোধী ছাত্র সংগঠন সহ শিক্ষাবিদরাও ।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে মঙ্গলবার দুপুরে । বাম প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী সংগঠন ওইদিন রাজ্য জুড়ে একাধিক দাবিতে দু’ঘন্টার কর্মবিরতি পালনের ডাকদেয়। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে জামালপুর কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী কর্ম বিরোতীতে অংশ নেয় । তা জানতে পেরে কলেজে পৌছে যান জামালপুর ব্লক তৃণমূল ছাত্র রিষদের সভাপতি বিট্টু মল্লিক। অভিযোগ তিনি কলেজের ‘স্টাফ রুমে’ ঢুকে টেবিল চাপড়ে ও আঙুল উঁচিয়ে কর্ম বিরোতিতে অংশ নেওয়া শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের হুমকি শাশানি দিয়ে ক্লাস করতে যেতে বলেন । এই ঘটনা সময়ে ঘটনার সময় কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি ভূতনাথ মালিক যে কলেজে উপস্থিত রয়েছেন তাও শিক্ষকদের ছানিয়েদেন টিএমসিপি নেতা বিট্টু মাল্লিক ।একই সঙ্গে বিট্টু শিক্ষকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ’আপনারা যদি আপনাদের মতো চলতে থাকেন, তাহলে আমরাও দেখে নেব’!যদিও কলেজের ছাত্র না হয়েও কেন তিনি শিক্ষকদের হুমকি শাসানি দিলেন সেই ব্যাপারে এদিন বিট্টু কোন কথা বলতে চাননি ।
তবে ঘটনার কথা জানার পর টিএমসিপির জেলা সভাপতি মহম্মদ সাদ্দাম হোসেন বলেন,’খুবই অনভিপ্রেত ও লজ্জাজনক ঘটনা। এ রকম আচরণ করা যায় না । বিট্টু মল্লিকেরএমন আচরণের বিষয়ে সংগঠন ও দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে ।’ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি ভূতনাথ মালিকের দাবি করেন,’আমি বিষয়টি জানতাম না । ঘটনার সময় ব্লক অফিসে একটি জরুরি বৈঠকে ছিলাম ।’
পশ্চিমবঙ্গ কলেজ শিক্ষক-কর্মীর’ সংগঠনের জামালপুর কলেজ ইউনিটের সভাপতি মোশারফ হোসেনের দাবি,’ওই ছাত্র-নেতা আমাদের কলেজের কেউ নয় । এমনকী প্রাক্তনীও নয় । তবুও কলেজে তাঁর অবারিত যাতায়াত । সেজন্যে নিজেকে বিশাল কিছু ভেবে আমাদেরকে হুমকি দিয়েছেন । আমরা ঘটনার পরেই দলগতভাবে টিআইসির কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়ে এসেছি ।’ কলেজ শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য,’কলেজের সঙ্গে যাঁর কোনও সম্পর্ক নেই, সেই দিনের পর দিন কলেজে এসে ‘দাদাগিরি’ করছে’। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরি বলেন,’এটা তো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটাই তো তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সংস্কৃতি । গত কয়েক বছর ধরে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বারবার এমনই ছবি দেখা যাচ্ছে ।’
কলেজের টিআইসি বিনয় হালদারের খুব সাবধানী ভাবে বলেন,’অনভিপ্রেত ঘটনা। কী হয়েছে বিস্তারিত খোঁজ নেব । তারপর প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’।