দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৫ আগস্ট : আদালতের নির্দেশে একটি জায়গা জবরদখল মুক্ত করল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার পুলিশ । ভাতার বাজারে সন্তোষ সায়ের নামে একটি পুকুরের পশ্চিমপাড়ে বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কপথের ঠিক ধারেই রয়েছে ওই জায়গাটি । বৃহস্পতিবার আদালতের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে জায়গাটি জবরদখলমুক্ত করে দেয় পুলিশ । অশান্তি এড়াতে প্রচুর পুলিশ ও র্যাফ মোতায়েন করা হয় ।
জানা গেছে,ভাতার ব্লকের কুলচন্ডা মৌজায় সন্তোষ সায়ের পুকুর পাড়ে ৯৯২ দাগের ওই জায়গার মালিক ছিলেন বর্ধমান শহরের বাসিন্দা জনৈক অমরনাথ তা নামে জনৈক এক ব্যক্তি । বর্তমানে ওই ব্যক্তি জীবিত নেই । ওই জায়গার উপর বেশ কয়েকটি দোকানপাট রয়েছে । তার মধ্যে কুলচন্ড গ্রাম নিবাসী তাপস কোঁয়ার ওরফে সুবোধ নামে এক ব্যক্তি সেখানে নির্মান সামগ্রীর ব্যবসা করেন । তাঁর ঠিক পাশেই ভাতার থানার বামশোর গ্রামের বাসিন্দা শেখ লুতফর রহমান নামে এক ব্যক্তির দখলে একটি ঘর ছিল । প্রায় আধ কাঠা পরিমান জায়গার উপর নির্মিত ওই ঘরটি নিয়ে সুবোধের সঙ্গে লুতফরের ঝামেলা চলছিল । ঝামেলা আদালত পর্যন্ত গড়ায় ।
তাপস কোঁয়ার বলেন,’আমি ২০০০ সালে অমরনাথ তায়ের কাছ থেকে ওই জায়গাটি কিনেছিলাম । ২০০৫ সাল পর্যন্ত ওরা আমায় ভাড়া দেয়নি । তাই ২০০৫ সালের পর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলাম । ২০০৭ সালে উচ্ছেদের নির্দেশ দেয় আদালত । তা সত্ত্বেও ঘর ছাড়েনি । হাইকোর্টে মামলা করি । সেখানেও ওরা হেরে যায় । তখনও জায়গা ছাড়েনি । উলটে আমায় প্রাণে মারার ভয় দেখায় । শেষে এদিন আদালতের নির্দেশে জায়গাটি জবরদখলমুক্ত করল পুলিশ ।
অন্যদিকে শেখ লুতফর রহমান বলেন, ‘অমরনাথ তা আমায় ওই জায়গা দিয়েছিলেন । এখানে আমি ঘর করে বসবাস করছি । কিন্তু সুবোধ কোঁয়ার দাবি করছেন উনি নাকি জায়গাটা কিনেছেন । এই শুনে আমি অমর তায়ের কাছে গিয়েছিলাম । কিন্তু উনি তখন এই বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেননি ।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা ভেস্টেট জায়গা । এখানে আমি প্রায় ৪৫ বছর ধরে রয়েছি । পাট্টার জন্য আবেদনও করেছিলাম ।’ লুতফরের ছেলে শেখ কালাম রহমানের কথায়,’যখন অমর তায়ের জায়গা ছিল তখন ভাড়া দিয়েছি। যখন জায়গাটা ভেস্ট হয়ে গেল তখন উনি বললেন আর ভাড়া দিতে হবে না । কিন্তু এখন আমাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে । কিন্তু উচ্ছেদের জন্য কোনো নোটিশই পাইনি আমরা ।’
জানা গেছে,এদিন সকাল প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ পুলিশবাহিনী প্রথমে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে । তারপর আদালতের প্রতিনিধিরা এলে শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান । যদিও এদিনের উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে কোনো প্রকার অশান্তির ঘটনা ঘটেনি ।।