প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২০ আগষ্ট : মোদীজি ক্ষমতায় আসার পর গরু পাচার বন্ধ করে দিয়েছে।কিন্তু কেষ্টর গরু পাচারের জন্যেই এই রাজ্যে বেশ কিছু সীমানার জায়গায় কাটাতারের বেড়া দিতে দেওয়া হয়নি । শনিবার বর্ধমানের অনুষ্ঠিত বিজেপির রাজ্য কিষাণ মোর্চার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এমনটাই দাবি করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার । একই সঙ্গে সুকান্তবাবু এদিন দিল্লিতে ডাক পাওয়া আইপিএস পুলিশ কর্তাদেরকেও নিশানা করেন।
বিজেপির রাজ্য কিষাণ মোর্চা এদিন শহর বর্ধমানের টাউনহল থেকে নীলপুর পর্যন্ত পদযাত্রার আয়োজন করে। পদযাত্রা শেষে নীলপুর মোড়ে পথসভা হয় । সেই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন,’পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এখনো অনেক কিছু বলা বাকি আছে। উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন, আর বাকিদের নাম বলুন ।’ এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এসএসকে এমে ভর্তি হওয়া নিয়ে সুকান্তবাবু বলেন, ‘১১০ কেজি ওজন নিয়ে দিনে দু’বার ভাত খেলে শরীর খারাপ হবে নাতো কি হবে?’
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করে রাজ্য বিজেপি সভাপতি বলেন,’মোদিজী ক্ষমতায় আসার পর গরু পাচার বন্ধ করে দিয়েছে।কিন্তু রাজ্য সরকার এখনও অনেক জায়গায় কাঁটা তারের বেড়া দেওয়ার জন্য জমি দেয়নি । কারণ তারা জানে , যদি কাঁটা তারের বেড়া তৈরি হয়ে যায় তাহলে কেষ্টের আর গরু পাচার করা হবে না ।’
নিজের দলের কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে সুকান্তবাবু বলেন,’বিধানসভা নির্বাচনের পর একবছর ধরে আমাদের কর্মীদের উপর অনেক অত্যাচার হয়েছে ।’ সেই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রকাশ্য সভামঞ্চ থেকে এদিন সুকান্তবাবু বলেন, ‘এবার কেউ একটা মার দিতে এলে দশটা ফেরত দিন। হামলা করলে উপযুক্ত ওষুধ দিয়ে পাঠান, দল আপনাদের পাশে আছে । আটজন আইপিএসকে দিল্লিতে তলব করা প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, ’দিল্লিতে কতজন আইপিএস যায় তা দেখার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি । সেখান থেকে কয়েকজন ফিরে না এলেও অবাক হবেন না ।’
পাশাপাশি তিনি বলেন,’পুলিশের উচিত তৃণমূল নেতাদের ঘার ধরে জেলে ঢোকানো। পুলিশ পারছে না তাই ইডি, সিবিআই এই কাজ করছে। ইডি, সিবিআই কম পরে যাচ্ছে, তাই এবার হয়তো বিজেপিকে পথে নামতে হবে।’ একই সঙ্গে সুকান্ত বাবু দাবি করেন,’বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এখন ভয় পেয়ে গিয়েছেন । তবে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চুরির প্রমাণ থাকলে তাকেও জেলে যেতে হবে ।’ বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে আর্থিক বৃদ্ধি মামলা হওয়া প্রসঙ্গে সুকান্তর হুঁশিয়ারি, মুখ্যমন্ত্রী বাপের বেটি হলে আমার সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত করান । সুকান্তবাবু এও বলেন, ‘পার্থ ও অনুব্রত গ্রেপ্তার হওয়ার পর সাধারণ মানুষ তৃণমূলের দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলছেন। যারা তৃণমূল নেতাদের টাকা দিয়ে চাকরি পাননি, প্রতারিত হয়েছেন তাঁরা বিজেপি পার্টি অফিসে যোগাযোগ করুন আমরা আপনাদের হয়ে লড়বো ।’
বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কেষ্ট ওরফে অনুব্রত মণ্ডলের চারদিনের সিবিআই হেফাজত হওয়ায় যারপরনাই খুশি রাজ্য বিজেপি সভাপতি । তিনি বলেন,’গরুর টাকায় অনুব্রত মণ্ডল মেডিকেল কলেজ বানিয়েছেন । ওর চালকল থেকে গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। সিবিআই হেফাজতে থাকলে আরো অনেক কিছু জানা যাবে । ওর আরো অনেক সম্পত্তিরও হদিস মিলবে ।’
বিজেপির রাজ্য সভাপতির এইসব বক্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন,’বিজেপি নেতাদের প্রতি এই রাজ্যের মানুষের সমর্থন নাই। তার প্রমাণ বিধানসভা ভোটেই বিজেপি পেয়েছে। তাই এখন কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে তৃণমূলকে আটকাতে চাইছে ।’।