প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৯ আগষ্ট : বন্ধুদের ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ থাকা ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার হল দূরে দামোদর নদ থেকে।মৃত ছাত্রের নাম সেখ আবিদ হোসেন (১৪)।শুক্রবার সকালে এই ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে শহর বর্ধমানের বাহির সর্বমঙ্গলা পাড়ায় ।ভাই আবিদের এই রহস্য মৃত্যুর তদন্ত ও দেষীদের শাস্তির দাবি করে এদিনই পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন দাদা সেখ আফরিদ হোসেন । ময়নাতদন্তের জন্য এদিনই ছাত্রের মৃতদেহ পাঠানো হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ মর্গে । পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে শক্তিগড় থানার পুলিশ ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,ছাত্র আবিদ হোসেনের বাড়ি শহর বর্ধমানের বাহির সর্বমঙ্গলা পাড়ায় । সে বর্ধমান সি এম এস স্কুলে নবম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। এদিন সকালে
জেলার শক্তিগড় থানা এলাকায় দামোদরের জল থেকে উদ্ধার হয় ছাত্রের মৃতদেহ । শক্তিগড় থানার পুলিশ ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করে ।আবিদের এমন মৃত্যুর ঘটনায় শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন তাঁর পরিবার পরিজন ও অন্য হসপাঠিরা ।
ছাত্রের দাদা আফরিদ হোসেন পুলিশকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টা নাগাদ আবিদ প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরে । এরপর খানিকটা বেলায় আবিদের ৩-৪ জন বন্ধু ফোন করে আবিদকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় । বন্ধুবান্ধব মিলে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। বেলা গড়িয়ে দুপুর হয়ে যাবার পরেও আবিদ বাড়ি না ফেরায় বাড়ির লোকজন আবিদকে ফোন করে । তখন আবিদ জানায়,সে শক্তিগড়ের বড়শুলে রয়েছে । তাঁর ফিরতে দেরি হবে বলেও জানায় । তারপর থেকে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও আবিদ আর বাড়ি ফেরেনি। তাঁর ফোনও সুইচ অফ থাকে । বাড়ির ছেলের কোন খোঁজ না পেয়ে উৎকন্ঠায় থাকা পরিবারের লোকজন পুলিশের দ্বারস্থ হন । তার পর থেকে গোটা রাত পেরিয়ে যায় । শুক্রবার সকালে শক্তিগড় এলাকায় দামোদরের জল থেকে উদ্ধার হয় ছাত্রের মৃতদেহ ।
ছাত্রের দিদি আফরিন খাতুন বলেন,তাঁর ভাই
আবিদের বন্ধুরা ফোন করে আবিদকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় । কিন্তু আবিদ বাড়িতে না ফেরা নিয়ে আবিদের বন্ধুরা প্রথম থেকে নানা বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে চলে । এদিন দামোদরের জল থেকে আবিদের মৃতদেহ উদ্ধারের পর বন্ধুরা বলে তাঁরা বড়শুলু দামোদরের স্নান করতে গিয়েছিল । স্নান করতে নেমে আবিদ দামোদরের জলে তলিয়ে যায় । আফরিন খাতুন অবশ্য তাঁর ভাইয়ের বন্ধুদের এক এক সময়ে এক এক রকম কথা বলার বিষয়টি ভালো ভাবে নেননি । আফরিন দাবি করেন,তাঁর ভাইয়ের বন্ধুদের কথাবার্তা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলেই তিনি মনে করছেন । বন্ধুরা আবিদকে প্রাণে মেরে দামোদরের জলে ফেলে দিয়ে থাকতে পারে বলে আফরিন খাতুন অভিযোগে জানিয়েছেন ।
শক্তিগড় থানার এক পুলিশ অফিসার বলেন,ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলেই ছাত্রের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হয়ে যাবে। তার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।।