এইদিন ওয়েবডেস্ক,রৌমারী(বাংলাদেশ),১১ জুলাই : বয়স ষাট ছুঁইছুঁই । বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী,তিন মেয়ে, এক ছেলে ও নাতিনাতনি । ভরা সংসার । তা সত্ত্বেও দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর রুপে মজেছিলেন ওই প্রৌঢ় । স্ত্রীর ভূয়ো অনুমতিপত্র দেখিয়ে কিশোরীকে বিয়ে করার মতলব ছিল তার । কিন্তু বিধি বাম । কিশোরীকে প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করার চেষ্ঠার অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে বেদম মার খেলেন ওই প্রৌঢ় । ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বড়াইকান্দি গ্রামে । প্রহৃত প্রৌঢ়ের নাম ইসকে আব্দুল্লাহ ।
জানা গেছে,ইসকে আব্দুলাহ দিনাজপুর সদরের সুইহারী (খালপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা ।তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আধিকারিক হিসাবে কর্মরত। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী কামরুন আরা,দুই মেয়ে ও এক ছেলে । ছেলে ছোট । সে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র । বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে কয়েক বছর আগে । তাঁর কয়েকটি ছেলেমেয়েও রয়েছে । মেজো মেয়ের বিয়ের যোগাযোগ চলছে । সেজো মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত ।
জানা গেছে,২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় শৌলমারী এমআর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইসকে আব্দুল্লাহ । সেই সময় এক কিশোরীর প্রেমে পড়ে যান তিনি । মেয়েটির কাছ থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে শুরু করেন প্রেমালাপ । এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তিন বরযাত্রী নিয়ে বিয়ের উদ্দেশ্যে উপস্থিত হন মেয়েটির বাড়িতে । সঙ্গে করে প্রথম স্ত্রীর অনুমতিপত্রও নিয়ে গিয়েছিলেন আব্দুল্লাহ । তবে সেটি ছিল ভুয়ো । এদিকে অনুমতিপত্রও দেখে সন্দেহ হওয়ায় বিয়েতে সাক্ষী হতে রাজি হননি আব্দুল্লাহ সঙ্গে আসা খাদ্যদপ্তরের দুই আধিকারিক মাহবুব হাসান ও সাজেদুর রহমান । এনিয়ে তাদের সঙ্গে বচসা জড়িয়ে পড়েন ইসকে আব্দুল্লাহ । এদিকে ঘটনার কথা চাওড় হয়ে গেলে প্রতিবেশীরা ওই কিশোরীর বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে যায় । এরপর ক্ষিপ্ত জনতা আব্দুল্লাহকে বাড়ি থেকে বের করে তাকে উত্তমমধ্যম দিতে শুরু করে । শেষে রৌমারী সদর ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু এসে তাকে উদ্ধার করেন ।
প্রহৃত প্রৌঢ়ের স্ত্রী কামরুন আরার অভিযোগ, ‘আমার স্বামী কিছুদিন ধরে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য আমায় বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছিল । কিন্তু আমি তাঁর বিয়েতে সম্মতি দিইনি । এজন্য আমার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করেছিল আমার স্বামী । এ নিয়ে আমি দিনাজপুর থানায় যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে মামলাও দায়ের করেছি ।’
অন্যদিকে কিশোরীর বাবার কথায়,’ইসকে আব্দুল্লাহ নামে ওই ব্যক্তি আমার মেয়েকে প্রলোভন দেখিয়েছিল কুড়িগ্রাম সদরে ৩০ শতক জমিতে বাড়ি করে দেবেন । ১০ ভরি সোনার গহনা এবং মোটা অঙ্কের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স করে দেবেন । এসব বলে আমার সিধেসাধা মেয়েকে সে প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছিল । তারপর প্রথম স্ত্রীর ভুয়া অনুমতিপত্র সহ দুজন লোককে সঙ্গে নিয়ে আমার মেয়েকে বিয়ে করতে আসেন । সেই সময় গ্রামবাসীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডার ও হাতাহাতি পর্যন্ত হয় ।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে ইসকে আব্দুল্লাহর সাফাই, ‘আমার প্রথম স্ত্রী দুটি অপারেশনের কারণে শারীরিকভাবে অপারগ। ফলে আমি দ্বিতীয় বিয়ে করতে এসেছি। মেয়ের বয়স কম এটা আমার জানা ছিল না ।’।