দিব্যেন্দু রায়,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১০ আগস্ট : পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের উত্তর সর্দারপাড়ায় তালা বন্ধ ঘর থেকে এক যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার করল পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম সঞ্জীব দে (৩৬) । পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ, সঞ্জীবের স্ত্রী রূপা সর্দার(দে)-এর সঙ্গে পাড়ারই এক যুবকের পরকীয় সম্পর্ক ছিল । তার জেরেই খুন করা হয়েছে সঞ্জীবকে । মৃতের কাকা দুর্লভ দে এই ঘটনায় সঞ্জীবের স্ত্রী রূপা সর্দার(দে), শাশুড়ি অঞ্জলী সর্দার, মৃতের খুড়শ্বশুর মিল সর্দার, শ্যালিকা মৃগমায়া সর্দার এবং ভাইরাভাই নিমাই সর্দারের বিরুদ্ধে কেতুগ্রাম থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন । পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা পলাতক । তাদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।
জানা গেছে,নিহত সঞ্জীব দে রেলের ঠিকাদারের অধীনে শ্রমিকের কাজ করতেন । কেতুগ্রামের উত্তর সর্দারপাড়াতেই তাঁর শ্বশুরবাড়ি । বছর পনেরো আগে রূপা সর্দারে তাঁর প্রেম বিবাহ হয় । বিয়ের পর থেকেই বাবা,মায়ের সঙ্গে পৃথক হয়ে যান সঞ্জীব । যদিও বর্তমানে সঞ্জীবের মা জীবিত নেই । ভাইয়ের সংসারে থাকে তাঁর বাবা । সঞ্জীব-রূপার তিন ছেলে । ছোট ছেলে বছর নয়ের পরম বাবা-মায়ের কাছেই থাকতো । বড় উৎসব (১৩)সঞ্জীবের পিসির বাড়িতে থাকে । মেজো রূপম থাকত সঞ্জীবের শ্যালিকার বাড়ি মুর্শিদাবাদের সালার থানার তালিবপুর গ্রামে । সঞ্জীবের পরিবারেই থাকতেন তাঁর শাশুড়ি অঞ্জলী সর্দার ।
জানা গেছে,বুধবার সকালে সঞ্জীবের বড় ছেলে উৎসব তার বাবার খোঁজ করতে বাড়িতে আসে । কিন্তু বাবার ঘরটি বাইরে থেকে তালা বন্ধ দেখে সে জানালা দিয়ে উঁকি দেয় । তখন তার নজরে পড়ে ঘরের ফ্যান চলছে । ভিতর থেকে ভীষণ পচা দূর্গন্ধ বের হচ্ছে । উৎসব বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানায় । এরপর প্রতিবেশীরা তালা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই সঞ্জীবের পচাগলা মৃতদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন । সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা থানায় খবর দেয় । পরে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় । তবে পুলিশ আসার আগেই উধাও হয়ে যায় মৃতের স্ত্রী ও শাশুড়ি । তারা সঞ্জীবের ছোট ছেলেকেও সঙ্গে করে নিয়ে যায় ।
মৃতের কাকা দুর্লভ দে বলেন, ‘স্ত্রী ও শাশুড়ির সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হত আমার ভাইপোর । সোমবার রাতেও অশান্তি হয়েছিল । রাত্রি প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ সঞ্জীবের বাড়ি থেকে চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় । পরে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানা যায় স্ত্রী শাশুড়িসহ কয়েকজনের সঙ্গে সঞ্জীবের তীব্র বচসা হয়েছিল । এরপর এদিন তালাবন্ধ ঘর থেকে ভাইপোর পচাগলা দেহ উদ্ধার হল ।’ তাঁর অভিযোগ,রূপার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই তাঁর ভাইপোকে খুন করা হয়েছে । কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কৌশিক বসাক জানিয়েছেন,ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে ।।