মানুষ ছেলেবেলা হইতে শিক্ষা পায় যে, সে দুর্বল ও পাপী। জগৎ এইরূপ শিক্ষা দ্বারা দিন দিন দুর্বল হইতে দুর্বলতর হইয়াছে; তাহাদিগকে শিখাও যে, তাহারা সকলেই সেই অমৃতের সন্তান—এমনকি যাহাদের ভিতরে আত্মার প্রকাশ অতি ক্ষীণ, তাহাদিগকেও উহা শিখাও । বাল্যকাল হইতেই তাহাদের মস্তিষ্কে এমন সকল চিন্তা প্রবেশ করুক, যাহা তাহাদিগকে যথার্থ সাহায্য করিবে, যাহা তাহাদিগকে সবল করিবে, যাহাতে তাহাদের যথার্থ কল্যাণ হইবে। দুর্বলতা ও কর্মশক্তিলোপকারী চিন্তা যেন তাহাদের মস্তিষ্কে প্রবেশ না করে। সৎ-চিন্তার স্রোতে গা ঢালিয়া দাও, নিজের মনকে সর্বদা বল—”আমি সেই, আমিই সেই” ; তোমার মনে দিনরাত্রি ইহা সঙ্গীতের মতো বাজিতে থাকুক, আর মৃত্যুর সময়েও “সোহহং, সোহহং” বলিয়া দেহত্যাগ কর । ইহাই সত্য… জগতের অনন্ত শক্তি তোমার ভিতরে । যে কুসংস্কার তোমার মনকে আবৃত রাখিয়াছে, তাহা দূর করিয়া দাও। সাহসী হও । সত্যকে জানিয়া তাহা জীবনে পরিণত কর; চরম লক্ষ্য অনেক দূর হইতে পারে, কিন্তু “উত্তিষ্ঠত জাগ্রত প্রাপ্য বরান্ নিবোধত” ।।
“উদ্বোধন কার্যালয়” কলকাতা কর্তৃক প্রকাশিত “বেদান্ত কি এবং কেন(প্রশ্নোত্তর) স্বামী বিবেকানন্দ” থেকে সংগৃহীত ।