এইদিন ওয়েবডেস্ক,০৫ আগস্ট : ২০১১ সালের পর আর জনগননা হয়নি ভারতে । এদিকে বিগত ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ-নেপাল-পাকিস্থান সীমান্তবর্তী ভারতীয় গ্রামগুলিতে জনসংখ্যার অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটে গেছে ।অর্গানাইজার উইইকলির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশ এবং আসাম পুলিশের সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে তাদের কিছু সীমান্ত অঞ্চলে মুসলিম জনসংখ্যা ৩২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি হয়েছে । যা জাতীয় গড় থেকে ১০-১৫ শতাংশের উর্ধে । একই সাথে দ্রুতহারে বেড়েছে মাদ্রাসা ও মসজিদের সংখ্যা । বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের অনেক গ্রাম রোহিঙ্গা মুসলিমদের অনুপ্রবেশকারীদের কারনে সম্পূর্ণ মুসলিম অধ্যুষিত হয়ে গেছে বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে ।
এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফেও একটি বিবৃতি এসেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিক জানিয়েছেন যে এত জনসংখ্যার পরিবর্তন কেবল জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয় নয়। এটি ভারতে অনুপ্রবেশের একটি নতুন প্যাটার্ন হতে পারে। এ কারণে সীমান্ত নিরাপদ রাখতে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) অপারেশনাল এলাকা ৫০ কিমি থেকে বাড়িয়ে ১০০ কিমি করার জন্য জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সুপারিশ করেছে বলে খবর ।
প্রতিবেদনে সুত্রে জানা গেছে,উত্তরপ্রদেশ ও আসাম পুলিশ কর্তৃক উপস্থাপিত গ্রাম পঞ্চায়েত আদমশুমারির রেকর্ডে এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির চিত্র উঠে এসেছে । গত ১০ বছরে উত্তরপ্রদেশের ৭ টি সীমান্ত জেলা পিলিভীত, সিদ্ধার্থনগর, শ্রাবস্তি, খেরি, বলরামপুর, মহারাজগঞ্জ এবং বাহরাইচে মুসলিম জনসংখ্যা ৩২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই ৭ জেলার অন্তর্গত ১১৬ টি গ্রামে মুসলমানদের জনসংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি । যা রাষ্ট্রীয় গড় ১২.৫০ শতাংশ থেকে অনেক বেশি। অন্যদিকে আসামের ধুবরি, করিমগঞ্জ, দক্ষিণ সালমারা এবং কাছাড় প্রভৃতি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে মুসলিম জনসংখ্যা ৩১.৪৫ শতাংশ । যা জাতীয় এবং রাজ্যের গড় থেকে ১৩.৪৫ শতাংশেরও উর্ধে । প্রতিবেদন অনুযায়ী গত চার বছরে এসব জেলায় মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণের পরিমাণ ২৫% পর্যন্ত বেড়েছে । ২০১৮ সালে ওই সমস্ত সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে যেখানে ১৩৪৯ টি মসজিদ ও মাদ্রাসা ছিল, বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ১৬৮৮ তে ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী,বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামগুলোতে জনসংখ্যার আমূল পরিবর্তন হয়ে গেছে । অনেক গ্রাম চলে গেছে রোহিঙ্গা মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের দখলে । আর রোহিঙ্গাদের পরিকল্পিত সন্ত্রাসের কারনে ওই সমস্ত গ্রামগুলির হিন্দু পরিবারগুলি তাদের বাড়িঘর, জমি এবং ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে । প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের এক একটি পরিবারে কমপক্ষে ৫০ জন করে সদস্য রয়েছে । তারা রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার প্রদত্ত সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে । শুধু তাইই নয়,উপসাগরীয় দেশগুলোর ধনী ব্যক্তিদের কাছ থেকেঅ আর্থিক সাহায্য পাচ্ছে ওই সমস্ত রোহিঙ্গারা ।
শুধু উত্তরপ্রদেশ,আসাম বা পশ্চিমবঙ্গ নয়,রাজস্থান ও উত্তরাখণ্ডেও একই চিত্র ধরা পড়েছে । রাজস্থানে মুসলিম জনসংখ্যার আকস্মিক বৃদ্ধি নিরাপত্তা সংস্থাগুলির জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । বিএসএফ-এর সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, বিগত ১০ বছরে রাজস্থানের এলাকায় জনসংখ্যার রহস্যজনক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে । যেখানে বাকি সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে জনসংখ্যার মাত্র ৮-১০ শতাংশ বেড়েছে । কিন্তু ২০-২৫ শতাংশ বেড়েছে মুসলিম জনসংখ্যা । পোখরান, মোহনগড় এবং জয়সালমিরের মতো সীমান্ত এলাকায় হঠাৎ করে দেওবন্দের মৌলবিরা আসতে শুরু করেছে । তারা রীতিমতো মৌলবাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলে অভিযোগ ।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলির আশঙ্কা ভারতে একটি মুসলিম করিডোর তৈরির ষড়যন্ত্র চলছে । আর টার্গেট করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিকে । মুসলিম করিডোর তৈরির জন্য মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের জনসংখ্যা বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এই করিডোরগুলি বাংলা থেকে বিহার, উত্তর প্রদেশ এবং হরিয়ানা হয়ে পাকিস্তানে মিলিত হয়েছে।।