প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০২ আগষ্ট : শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় ’ইডি’ গ্রেপ্তার করেছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে।তার পর থেকেই প্রকশ্যে আসতে শুরূ করে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সংক্রান্ত নানা অনিয়ম। আর এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠলো বিশ্ববিদ্যালয়েরই ফিনান্স ডিপার্টমেন্টের এক কর্মীর বিরুদ্ধে।টাকা ফেরতের দাবীতে ভক্ত মণ্ডলের নামে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের মাসিলা গ্রাম নিবাসী সুব্রত সরকার। ঘটনা প্রকশ্যে আসতেই মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যলয়ে ব্যাপক তোলপাড় পড়ে যায়। যদিও অভিযোগের আঙুল ওঠা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স বিভাগের কর্মী ভক্ত মণ্ডল দাবী করেছেন বদনাম করতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
খণ্ডঘোষ থানার মাসিলা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত সরকার পুলিশকে জানিয়েছেন,তাঁর ছেলেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পাইয়ে দেবেন জানান ভক্ত মণ্ডল। সেই জন্য তাঁর কাছে ভক্ত মণ্ডল দু’লক্ষ টাকা দাবি করেন।সুব্রত বাবু বলেন ,ভক্ত মণ্ডলের কথা বিশ্বাস করে তিনি তাকে নগদ চল্লিশ হাজার টাকা দেন। পাশাপাশি ৪ কাঠার একটি জমিও ভক্ত মণ্ডলের কাছে বিক্রি করেন। যার দাম ঠিক হয় এক লক্ষ ষাট হাজার টাকা। এই ৪ কাঠা জমি ভক্ত মণ্ডল তার কাকার ছেলে বাবু মণ্ডলের নামে রেজেষ্ট্রি করেন। সুব্রত বাবুর অভিযোগ, টাকা নেওয়ার পর থেকে দু’বছর পার হয়ে হয়ে গেলেও তাঁর ছেলের চাকরি করে দিতে পারে না ভক্ত মণ্ডল।টাকাও ফেরত দেন না । একাধিকবার তিনি ভক্ত মণ্ডলের কাছে টাকা ফেরত চাইতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভক্ত মণ্ডল টাকা ফেরত দেন নি। অনেক তাগাদার পর তাঁকে ৫০ হাজার টাকার একটি চেক দেন সুব্রত সরকার।বাকি টাকা তিনবারে পঞ্চাশ হাজার করে ফেরৎ দেবেন বলে ভক্ত মণ্ডল জানিয়ে ছিলেন।কিন্তু ব্যাঙ্কে ওই চেক জমা দেওয়ার পর তিনি জানতে পারেন ভক্ত মণ্ডলের অ্যাকাউন্টে মাত্র ৪ হাজার টাকা আছে। এর পরেই টাকা ফেরত চাইতে তিনি ফের ভক্ত মণ্ডলের কাছে যান। তখন তাঁকে হুমকি দেয় ভক্ত মণ্ডল জানিয়ে দেন কোন টাকা ফেরত দেবেন না।এর পরিস্থিতিতে ২ লক্ষ টাকা ফেরৎ পাবার আর কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে ভক্ত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বলে সুব্রত সরকার জানিয়েছেন ।
সুব্রত সরকারের আনা এই অভিযোগ যদিও
মানতে চাননি ভক্ত মণ্ডল। তিনি দাবি করেন তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অসত্য ।পাল্টা তিনি সাফাই দেন ,সুব্রত সরকারদের একটি যৌথ জমি আছে । যে জমির ভাগীদার ছয় জন ।কিন্তু ওই জমি একা ভোগ করতো । বাকি ভাগীদাররা জমি বিক্রি করে দিচ্ছে জানতে পেরে তিনি একটি জমি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন।সেই জমির দাম ৮০ হাজার টাকায় রফা হয়।রফা অনুযায়ী তিনি অগ্রিম পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক দেন। বাকি টাকা রেজেস্ট্রি হবার দিন সবটা মিটিয়ে দেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন।ওই জমি জমি সংক্রান্ত আক্রোশের থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে সুব্রত সরকার এই মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন । মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেছেন বলে ভক্ত মণ্ডল দাবি করেছেন।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাই চন্দ্র সাহা বলেন,’আমার কাছে এরকম কোন অভিযোগ জমা পড়ে নি।অভিযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তার তদন্ত করে দেখা হবে“।বর্ধমান থানার এক পুলিশ কর্তা বলেন , অভিযোগ দায়ের হলে তার তদন্ত হবে ।’।