এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,৩১ জুলাই : বাবার অনুপস্থিতিতে মা’কে ছুরি হাতুড়ি দিয়ে নৃসংশভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে খুন করল গুনধর ছেলে । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া জেলার ছাতনা থানা এলাকার চন্ডিদাস পল্লী এলাকায় । পুলিশ জানিয়েছে, নিহত মহিলার নাম বন্দনা মন্ডল(৫৫) । পুলিশ তাঁর খুনি ছেলে সুমন্ত মন্ডলকে গ্রেফতার করেছে । রবিবার ধৃতকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হলে ৩ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক ।
জানা গেছে,স্ত্রী বন্দনা মন্ডল ও একমাত্র ছেলে সুমন্ত মন্ডলকে নিয়ে থাকতেন চন্ডিদাস পল্লীর বাসিন্দা স্বপন মন্ডল । সুমন্ত সিআইএসএফ-এর জওয়ান ছিলেন । গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে বাড়ি চলে আসেন । তারপর থেকে বাড়িতেই রয়েছেন সুমন্ত । আকছারই সে মাঝে মধ্যে বাবা ও মা’কে মারধর করত বলে অভিযোগ ।
স্বপন মন্ডল বলেন, ‘শনিবার বিকেলে আমার স্ত্রী কিছু টুকিটাকি জিনিস কিনে আনার জন্য বলে । তাই কেনাকাটার জন্য বিকেল ৫ টা নাগাদ ছাতনা বাজারে গিয়েছিলাম । রাত্রি আটটা নাগাদ বাড়ি ফিরে দেখি বাড়ির দরজা,জানালা বন্ধ । লোহার গ্রিলে ভিতর থেকে তালা লাগানো । অনেক ডাকাডাকি করেও কেউ ঘর খুলছে না দেখে আমি আমার শালাদের বিষয়টি জানায় । এরপর তারা এসে অনেক ডাকাডাকি করে ঘর না খোলা হলে ছাতনা থানার দ্বারস্থ হই । শেষে পুলিশ তালা ভেঙে ঘরে ঢোকে । তখন দেখা যায় নৃসংশভাবে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে এবং হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে আমার স্ত্রীকে । আর মায়ের মৃতদেহের পাশেই বসে রয়েছে আমার ছেলে ।’
জানা গেছে,পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধারের পাশাপাশি খুনি ছেলেকে গ্রেফতার করে । এদিন মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজে । এদিকে নিজের মাকে এমন নৃশংসভাবে খুনের কারন নিয়ে ধন্দ্বে রয়েছে পুলিশ ও প্রতিবেশীরা ।
তাহলে কি মানসিক অবসাদেই এই নৃশংস ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে সুমন্ত ? এই প্রশ্নের উত্তরে নিহতের স্বামী স্বপন মন্ডল বলেন, ‘কোন মানসিক সমস্যা নেই, অত্যন্ত বদমাশ আমার ছেলে । চরম উচ্চাশা ওর । আমাকেও ইতিপূর্বে একাধিকবার মেরে মুখ ফাটিয়ে দিয়েছিল । আমি ক্ষমা করে দিয়েছি । কিন্তু নিজের মাকে যে এমন ভয়ঙ্করভাবে খুন করবে স্বপ্নেও কল্পনা করিনি । আমি ওর ফাঁসি চাই ।’ অন্যদিকে আদালতে যাওয়ার পথে খুনি ছেলে সুমন্ত মণ্ডল বলেন, ‘এই ঘটনার পিছনে কারন আছে ।’ তবে কারন খোলশা করে কিছু বলেননি তিনি । পুলিশ জানিয়েছে,ধৃতকে জেরা করে খুনের কারন জানার চেষ্টা চলছে ।।