এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঝাড়খণ্ড ও বিহার,৩১ জুলাই : ঝাড়খণ্ড ও বিহারের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকার অধিকাংশ সরকারি স্কুলগুলিতে রবিবারের পরিবর্তে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ । এমনকি অনেক সরকারি স্কুলের নামের সাথে উর্দুও যোগ করা হয়েছে । বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হতেই নড়েচড়ে বসেছে দুই রাজ্যের সরকার । কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশের পর গত শুক্রবার ঝাড়খণ্ডের প্রশাসন বেশ কিছু স্কুল খোলার চেষ্টা করলে স্থানীয় মুসলিমদের বাধায় স্কুল খোলা সম্ভব হয়নি বলে সংবাদ মাধ্যম ওপি ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে ।
প্রতিবেদন সুত্রে জানা গেছে,শুক্রবার পালামু জেলার পালামুর নয়াবাজার ও বিশ্রামপুরের ৫ টি স্কুল খোলার চেষ্টা করা হয়েছিল । কিন্তু বহু বুঝিয়েও স্থানীয় মুসলমানদের রাজি করানো যায়নি । তারা জোর করে স্কুল বন্ধ করে দেয় । একইভাবে নয়াবাজার,দেহরিয়ায় স্কুল বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দেয় মুসল্লিরা । ব্লক প্রোগ্রাম অফিসার মণি কুমার পান্ডে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রবিবার স্কুলগুলিতে ছুটি থাকবে বলে জানিয়েছেন । জানা গেছে,পালামু জেলায় ২০টি উর্দু স্কুল রয়েছে,এর পাশাপাশি আরও ৪৯টি স্কুলে উর্দু যোগ করে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে । আর এই খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর, পালামু জেলা শিক্ষা আধিকারিক উপেন্দ্র নারায়ণ শুক্রবার এই স্কুলগুলির নাম থেকে উর্দু বাদ দিয়ে খোলার নির্দেশ জারি করেছিলেন । কিন্তু সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে স্থানীয় মুসলমানরা স্কুল খুলতে দেয়নি বলে অভিযোগ ।
অন্যদিকে আরও জটিল অবস্থা বিহারে । বিহারে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা বলে পরিচিত পূর্ণিয়া, কিষাণগঞ্জ, কাটিহার এবং আরারিয়ায় মোট ৫০০ টি সরকারি স্কুলগুলিতে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন পালিত হয়ে আসছে । বিহারে মোট সরকারি স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৭৫,০০০ । তার মধ্যে পূর্ণিয়ার প্রায় ২০০ টি, আরারিয়ায় ২২৯ টি, কাটিহারের ১০০ টি এবং কিষাণগঞ্জের প্রায় ৩৭ টি বিদ্যালয়ে রবিবারের পরিবর্তে শুক্রবার ছুটি রয়েছে বলে জানা গেছে।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর বিহার জুড়ে অভিন্ন ছুটির দাবি করেছে বিজেপি । যদিও বিজেপির এই দাবির বিরোধিতা করেছে এনডিএর জোটসঙ্গী জেডিইউ এবং হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (সেকুলার) । তারা ‘ঐতিহ্য এবং নজির’-এর অজুহাত দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করেছে । যদিও এনিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে বিহার সরকার । বিহারের শিক্ষামন্ত্রী এবং জেডিইউ নেতা বিজয় কুমার চৌধুরী এই ধরনের স্কুলগুলির একটি তালিকা চেয়েছেন । মন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘আমরা তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট তলব করেছি এবং কর্মকর্তাদের কাছে জবাব চেয়েছি ।’
উল্লেখ্য,২০১১ সালের জনগননা অনুযায়ী বিহারের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৭ শতাংশ মুসলমান । সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে কিশানগঞ্জ জেলায় । যেখানে প্রায় ৬৭ শতাংশ মুসলমান রয়েছে । এর পরে রয়েছে কাটিহার,আরারিয়া এবং পূর্ণিয়া । এই তিন জেলায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ মুসলমান রয়েছে বলে খবর ।।