জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,বর্ধমান,৩০ জুলাই : ৮০তম জন্মদিনে লক্ষ্য ছিল আশি ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা। বিপুল সংখ্যায় রক্তদাতারা উপস্থিতও ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সময়ের কাছে হার মেনে লক্ষ্য থেকে সামান্য দূরে থামতে হলো। শুক্রবার (২৯ জুলাই ২০২২) ছিল পূর্ব বর্ধমান জেলার দেওয়ানদীঘি থানার কামারকিতার প্রয়াত বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা শিল্পপতি কৃষ্ণদাস পালের আশি তম জন্ম দিবস। এলাকায় তার বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজকে স্মরণ করে কামারকিতা শ্রীরামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সেবা কেন্দ্র এবং ‘পূর্ণম ফাউন্ডেশন’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্হার যৌথ উদ্যোগে বন্ডুল ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কামারকিতা শ্রীরামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সেবা কেন্দ্রে একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়।
বর্ধমানের ক্যামরী হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্ক শাখার সহযোগিতায় শিবির থেকে মোট ৭২ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়। রক্তদাতাদের মধ্যে প্রায় ত্রিশ জন ছিলেন মহিলা। সংগৃহীত রক্ত সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রক্তদাতাদের হাতে একটি করে শংসাপত্র, গাছের চারা, ঠাকুরমা ও স্বামীজির বই তুলে দেওয়া হয়।
রক্তদাতাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুর রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী অজ্ঞেয়ানন্দ মহারাজ, দেওয়ানদিঘি থানার ওসি দীপ্তেষ চ্যাটার্জী, কামারকিতা শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সেবা কেন্দ্রের সম্পাদক দিব্যেন্দু দাস, সহ সভাপতি বিবেকানন্দ মল্লিক, সব্যসাচী, পিনাকী সহ কামারকিতা শ্রীরামকৃষ্ণৃ বিবেকানন্দ সেবা কেন্দ্রের সকল সদস্য-সদস্যা এবং বিশিষ্ট সমাজসেবী সৌগত গুপ্ত যিনি প্রতিবছর গুসকরায় এই ধরনের রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে থাকেন।
প্রসঙ্গত,প্রয়াত কৃষ্ণদাস পাল এলাকায় শিল্পপতির পরিবর্তে সমাজসেবী হিসাবে বেশি পরিচিত ছিলেন। খেলাধুলা থেকে শুরু করে প্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, রাস্তাঘাট নির্মাণ সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে তার অবদান আছে। দুস্থ ছাত্রছাত্রীদের জন্য তিনি স্কলারশিপ চালু করেন। এলাকার মানুষের সঙ্গে তার স্বাভাবিক মেলামেশা ছিল দেখার মত। তাঁর মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা সেই সমস্ত সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডগুলি চালিয়ে যাচ্ছেন ।
বিশিষ্ট সমাজসেবী দিব্যেন্দুবাবু বললেন,’বিভিন্ন কারণে মাঝে দু’চার বছর এই শিবির বন্ধ থাকলেও এলাকাবাসীর অনুরোধে আমরা এই মহান মানুষটির আশিতম জন্মদিনটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছি। পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় আগামী দিনে তাঁর দেখানো পথেই আমরা চলব।’আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে গুসকরা থেকে গিয়েছিলেন আর এক সমাজসেবী সৌগত গুপ্ত। তিনি বললেন,’এখানে এসে আমি অনেক কিছু শিখলাম এবং আমি মুগ্ধ ।’।