এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,২৮ জুলাই : বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথম ডিজিটাল ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে । বুধবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন বাংলাদেশের হিন্দুসহ অনান্য সংখ্যালঘুদের কাছে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে । কারন রিপোর্ট অনুযায়ী রেকর্ড হারে কমছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সম্প্রদায়ের সংখ্যা । এক একটি জেলায় প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে হিন্দু-বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ।
জনশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা বর্তমানে ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ । মহিলার সংখ্যা ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬। পুরুষের চেয়ে মহিলা বেশি বাংলাদেশে । যেখানে ২০০১ সালে দেশে জনসংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪৩ লাখ ৫৫ হাজার ২৬৩। ১৯৯১ সালে ছিল ১০ কোটি ৬৩ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২ জন। ১৯৮১ সালে ছিল ৮ কোটি ৭১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৫ জন এবং ১৯৭৪ সালের প্রথম শুমারিতে দেশে জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৭১।
১৯৭৪ সালের পর থেকে ২০২২ পর্যন্ত ৪৮ বছরের সময়কালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে প্রায় আড়াই গুণ । কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যেই । প্রতি বছর রেকর্ড হারে কমে যাচ্ছে হিন্দু ও অনান্য সম্প্রদায়ের সংখ্যা ।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিন্দু জনসংখ্যা ৮.৫৪ শতাংশ থেকে কমে ৭.৯৫ শতাংশ, বৌদ্ধ জনসংখ্যা ০.৬২ শতাংশ থেকে ০.৬১ শতাংশ, খ্রিস্টান জনসংখ্যা ০.৩১ শতাংশ থেকে ০.৩০ শতাংশ এবং অন্যান্য ধর্মের জনসংখ্যা ০.১৪ শতাংশ থেকে কমেছে । সেখানে মুসলিম জনসংখ্যা ৯০.৩৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯১.০৪ শতাংশ হয়েছে ।
হিন্দুদের সবচেয়ে করুন অবস্থা ময়মনসিংহ(৩.৯২ শতাংশ),রাজশাহী(৫.৬৭ শতাংশ),চট্টগ্রাম (৬.৬১ শতাংশ),ঢাকা (৬.২৫ শতাংশ) প্রভৃতি জেলায় ।
বাংলাদেশে ব্যাপক হারে সংখ্যালঘুদের জনসংখ্যা হ্রাসের পিছনে মূলত মুসলিম কট্টরপন্থীদের অত্যাচারকেই দায়ি করা হচ্ছে । জোর করে ধর্মান্তরিত করা,মেয়েদের লাভ জিহাদের শিকার বানানো,জমি জায়গা জবরদখল করে নেওয়া,ধর্মীয় স্বাধীনতায় বাধা,বেছে বেছে হিন্দুদের খুন,ঘরবাড়ি ও মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ প্রভৃতি ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ । প্রতি বছর বহু হিন্দু পরিবার আতঙ্কে দেশ ছেড়ে ভারতে পাড়ি জমাচ্ছেন । যার ফলে হু হু করে কমছে বাংলাদেশের হিন্দুদের সংখ্যা ।।