এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২৭ জুলাই : বাড়িতে ঢুকে এক গৃহবধুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল মালদার এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে । অভিযোগ,থানায় এফআইআর করতে গেলে পুলিশ বধুকে পালটা কেসে ফেঁসে যেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় । শেষে আদালতের দ্বারস্থ হলে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে ফিটু নামে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মামলা প্রত্যাহারের জন্য টাকার প্রলোভন ও খুনের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নির্যাতিতা বধু । বুধবার এনিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিতা । এদিকে এই ঘটনার কথা চাওড় হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায় । স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে, তাঁরা নির্যাতিতার পাশে আছেন। পুলিশ সুপারও যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে তাঁরা বধুকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে নামবেন । অন্যদিকে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । এদিকে দলীয় নেতার বিরুদ্ধে এহেন ঘৃণ্য অভিযোগ ওঠায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল নেতৃত্ব ।
জানা গেছে,মালদা জেলার মহিষবাথানী গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সাহানগর গ্রামে বাড়ি নির্যাতিতা বধুর । অন্যদিকে একই গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম মহিষবাথানী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধানের স্বামী তথা তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা বলে এলাকায় পরিচিত । বধুর অভিযোগ, ‘চলতি মাসের ১২ তারিখে সকাল প্রায় ৮ টা ৪০ মিনিট নাগাদ আমাদের বাড়িতে আসে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে ফিটু । তখন আমি বাড়িতে একাই ছিলাম । ফিটু আমাকে জড়িয়ে ধরলে আমি চিৎকার করার চেষ্টা করি । তখন সে আমার মুখে কাপড় গুঁজে দেয় । বলে চিৎকার করে কোনো লাভ নেই । পার্টি, পুলিশ, প্রশাসন সব আমার হাতে । তাই আমি যা বলছি তাই কর । এরপর সে আমায় ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় ।’
নির্যাতিতা বধুর অভিযোগ,’ঘটনার পর আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে থানার আইসি আমায় হুমকি দেন,অভিযোগ প্রমান করতে না পারলে উনি আমায় ৬ মাসের জন্য জেলে ঢুকিয়ে দেবেন । শেষে বাধ্য হয়ে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি । আর তারপর থেকেই মামলা তোলার জন্য আমায় ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছে ফিটু । টাকার প্রলোভন দেখাচ্ছে । খুনের হুমকি দিচ্ছে । এমনকি আমার মতই আমার মেয়েকে পর্যন্ত ধর্ষণ করবে বলে শাসাচ্ছে । বর্তমানে আমি খুব আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি ।’
জানা গেছে,গত ১৪ ই জুলাই মালদা জেলা আদালতে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা রজু করেন নির্যাতিতা । মালদা থানাকে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত । কিন্তু আদালতের নির্দেশের পরেও মালদা থানার পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ । শেষে এদিন পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা বধু । অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালদা পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব ।
এদিকে এই ঘটনায় শাসকদলকে নিশানা করেছেন বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত । তিনি বলেন, ‘এটা তৃণমূলের সংস্কৃতি । তারা মহিলাদের কোনো সম্মান করে না । বড় নেতারা তাঁদের বান্ধবীদের জন্য টাকার পাহাড় তৈরি করছেন । আর গ্রামেগঞ্জের ছোট খাটো তৃণমূল নেতারা মহিলাদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন নোংরা কাজ করছে । এদিকে পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না । পুলিশ দলদাসে পরিনত হয়েছে ।’ তিনি বলেন, ‘ওই মহিলা পুলিশ সুপারের কাছে গিয়েছেন শুনছি । কিন্তু এসপি যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে বিজেপি পথে নামবে । বিজেপি ওই নির্যাতিতা মহিলার পাশে আছে ।’অন্যদিকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন,’কেউ অন্যায় করলে দল তার পাশে দাঁড়াবে না । প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’।