এইদিন ওয়েবডেস্ক,কানপুর(উত্তরপ্রদেশ),১৬ জুলাই : উদয়পুরে কানহাইয়ালাল হত্যাকাণ্ডের পর ফের শিরোনামে দাওয়াত-ই-ইসলামী সংগঠন । তবে এবার কানপুরের কর্নেলগঞ্জে নির্মিত সংগঠনের ৫ তলা বিশিষ্ট অফিসটিকে ঘিরে বিতর্কের সুত্রপাত । কারন ওই ভবনটি অবৈধভাবে নির্মিত বলে দাবি করা হচ্ছে । তাই কানপুরে দাওয়াত-ই-ইসলামীর পাঁচতলা অফিসের নথিপত্র ১৫ দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কানপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেডিএ) । কেডিএ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নথিপত্র না দেখালে ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে । এই বিষয়ে কেডিএ স্পেশাল অফিসার অবিনাশ সিং বলেছেন,’ওই ভবন নির্মাণের বিষয়ে একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। ভবনের বাসিন্দাদের কাগজপত্র দেখানোর জন্য ২৯ শে জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে । নোটিশের জবাবে দাখিলকৃত নথিপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে । তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’
স্থানীয়রা জানান, আগে এই ভবনে পুরসভা পরিচালিত দুটি বিদ্যালয় ছিল । অভিযোগ জানানোর পর কর্নেলগঞ্জ এসিপি ত্রিপুরারি পান্ডে পৌর কর্পোরেশন, কেডিএম এবং বিএসওকে চিঠি দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চেয়ে পাঠিয়েছিলেন । এসিপিকে দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, কর্নেলগঞ্জের ছোটিমিয়ান হাটে পৌর করপোরেশনের দুটি স্কুল চলছিল। যেখানে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস হত । যার মধ্যে একটি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল বেকনগঞ্জের নামে এবং অন্যান্য প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ছিল পৌর কর্পোরেশনের নামে । যা পৌর কর্পোরেশন ও বেসিক এডুকেশনের আধিকারিকদের যোগসাজশে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় । ছয় মাস আগে পর্যন্ত এখানে পৌর বিদ্যালয় চলতো বলে দাবি স্থানীয়দের ।
স্থানীয়রা আরও জানান,এই দুটি বিদ্যালয়ই প্রায় ৮০০ বর্গগজ জমির ওপর নির্মিত ছিল । ভূমি মাফিয়া ও পুর কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ওই ৮০০ বর্গগজ জমি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে । এর মধ্যে দাওয়াতে ইসলামী সংগঠনের নামে অবৈধভাবে ৩০০ বর্গগজ রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। এরপর সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই জায়গায় পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করা হয় । ভবনের বাইরে ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় দাওয়াত-ই-ইসলামী ইন্ডিয়ার একটি বোর্ড লাগানো হয়।
উল্লেখ্য,দাওয়াত-ই-ইসলামী আদপে একটি পাকিস্তানি সংগঠন । এর প্রতিষ্ঠাতা মওলানা ইলিয়াস আত্তারি পাকিস্তানে থাকেন। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান থেকে দাওয়াত-ই-ইসলামীর একটি দল কানপুরের মুসলিম এলাকায় এসে ঠেক করে । পাকিস্তানের মৌলবাদী এই সংগঠনটি বর্তমানে কানপুরে শক্ত ঘাঁটি করে ফেলেছে । বলা হয় কানপুরে দাওয়াত-ই-ইসলামির প্রায় ৫০ হাজার সদস্য আছে । সংগঠনের সদস্যরা কানপুরের মিশ্র জনসংখ্যা এলাকা বলে পরিচিত বাবুপুরওয়া, গোয়ালতলি, প্যারেড, মাচারিয়া, জাজমউ, বেকগঞ্জের মতো এলাকায় বাস করে । সিএএ ও এনআরসি নিয়ে বিক্ষোভের সময় কানপুরে দাওয়াতে-ই-ইসলামি এবং পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার (PFI) অস্তিত্বের কথা প্রথম জানতে পারে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি ।।