দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৫ জুলাই : ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে ‘প্যায়ার কা তোফা তেরা বনা হ্যায় জীবন মেরা/দিল কে সাহারে ম্যায়নে পালিয়েঁ-এ-এ’- কিশোর কুমার ও আশা ভোঁসলের জনপ্রিয় হিন্দি গান । দাঁত মুখ খিঁচিয়ে মাথা হেলিয়ে দুলিয়ে সেই গানে ঠোঁট মেলানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন এক ব্যক্তি । একই ভিডিওর অপর দিকে এক মহিলা ও কিশোরকে কোনো চলচিত্রের ডায়লগে ঠোঁট মেলাতে দেখা যাচ্ছে । আদপে এটি একটি মিম ভিডিও । সাধারণ মিম ভিডিও তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা স্বাভাবিক ঘটনা । কিন্তু ২০ সেকেন্ডের এই ভিডিওকে কেন্দ্র করে শোড়গোল পরে গেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারে । কারন ভিডিওটি যারা তৈরি করেছেন তাঁরা হলেন ভাতারের বিজিপুর হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা সুমন্ত দাস এবং সুদীপ্তা মল্লিক । সুমন্তবাবু গণিত বিভাগের শিক্ষক ও সুদীপ্তাদেবী ভূগোলের শিক্ষিকা । তাঁদের এই মিম ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই সমালোচনার ঝড় উঠছে । তবে কেউ কেউ শিক্ষক শিক্ষিকার পাশেও দাঁড়িয়েছেন ।
রাজীব সানি (Rajeev Sunny) নামে এক ফেসবুক ইউজার ভিডিওটি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘এই হচ্ছে আমাদের বিজিপুর হাই স্কুলের গুণধর শিক্ষক শিক্ষিকা । তাহলে আমাদের ছাত্র ছাত্রীদের কি হবে ? তারা তো umbrella কে umrela বলবে এতে দোষের কিছু নেই। ভবিষ্যত প্রজন্মকে এরা কি বার্তা প্রেরণ করেছেন ।’ কেউ কেউ আবার ওই শিক্ষক শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করারও দাবি তুলেছে । তবে অনেককেই শিক্ষক শিক্ষিকার পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে । মেরিনা খাতুন নামে এই ইউজার লিখেছেন, ‘আপনি এই ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট না করলেই পারতেন । আমরা জানি ওনারা ক্লাসে তো ভালো পড়ান । ওনাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে নাইবা ঘাঁটলাম ।’ সমাপিকা গাঙ্গুলি নামে এক ইউজার ভিডিও পোস্ট করার সমালোচনা করেছেন ।
জানা গেছে,বৃহস্পতিবার রাতের দিকে এই মিম ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয় । তারপর নিমেষের মধ্যেই এটি ভাইরাল হয়ে যায় । পোস্টটি শুক্রবার নজরে পড়তেই শিক্ষক সুমন্ত দাস কমেন্ট বক্সে লিখেছেন, ‘আমি এই ভিডিও টা মজার ছলে মেয়েকে নিয়ে করছিলাম । আমার মেয়েও আর একটা ভিডিও করেছিল । দুটো ভিডিও পোস্টও করে ফেলে । ২ মিনিট এর মধ্য আমি দেখতে পাই ও সঙ্গে সঙ্গে ডিলিট করে দিই। কিন্তু কেউ এটাকে সঙ্গে সঙ্গে ডাউনলোড করে ফেসবুক বা হোয়াটস অ্যাপে শেয়ার করেছে । তাই আমার অনুরোধ এই পোস্টটা মুছে দিন ।’
অন্যদিকে বিষয়টি কানে যেতে অস্বস্তিতে পড়েছেন শিক্ষিকা সুদীপ্তা মল্লিক । তিনি জানান, সন্তানের মনোরঞ্জনের জন্য ভিডিওটি তৈরি করেছিলেন । অনেকদিন আগে ইনস্ট্রাগামে নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে তা পোস্ট করেছিলেন । কিন্তু সেখান থেকে কিভাবে ভিডিওটি ভাইরাল হল তা নিয়ে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন । এই মিম ভিডিও প্রসঙ্গে বিজিপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুশান্ত অধিকারী জানিয়েছেন, ভিডিওটি খতিয়ে দেখার পর তিনি শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ডেকে সতর্ক করবেন ।।
ছবি : ভিডিও থেকে স্ক্রীন শর্ট নেওয়া ।