এইদিন ওয়েবডেস্ক,কিশোরগঞ্জ(বাংলাদেশ),১৪ জুলাই : ঈদের ছুটি থাকায় বাড়ি গিয়েছিলেন হিন্দু নার্স । কিন্তু ছুটি চলাকালীন তাঁকে ফোন করে ডেকে এনে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠল হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও তার সঙ্গীসাথীদের বিরুদ্ধে । ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের (Kishorganj) ভৈরব উপজেলার(Bhairab Upazila) ইউনাইটেড হাসপাতাল অ্যান্ড আর্থোপেডিক সেন্টার নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে । নিহত নার্সের নাম রিমা প্রামাণিক (১৮) । সোমবার ভোর সাড়ে ৪ টা নাগাদ হাসপাতালের নার্স কোয়ার্টার থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয় । এই ঘটনায় নিহতের বাবা সেন্টু চন্দ্র প্রামাণিকের অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালের এমডি (Managing Director) হানিফুর রহমান সুমনকে (Hanifur Rahman Sumon, 35) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।
জানা গেছে,রায়পুরার পিরিজকান্দি গ্রামে বাড়ি রিমা প্রামানিকের । তিনি ইউনাইটেড হাসপাতাল অ্যান্ড আর্থোপেডিক সেন্টারে বিগত প্রায় ২ বছর ধরে নার্সের কাজ করছিলেন । ঈদের তিন দিন আগে ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন রিমা । শনিবার ঈদের আগের দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি ফোন করে তাঁকে ডিউটিতে যোগ দিতে বলে । ঈদের দিন ডিউটি করে তিনি পাশের বিল্ডিংয়ের ৫ম তলায় নার্সদের থাকার নির্দিষ্ট ঘরে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন । রবিবার ঈদের রাতে কোনো এক সময় হানিফুর রহমান সুমন ও তার দলবল মিলে রিমাকে গনধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করে বলে অভিযোগ । খবর পেয়ে সোমবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ ।
নিহতের বাবা সেন্টু চন্দ্র প্রামাণিক সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেন, ‘আমার মেয়ে ঈদের আগে ছুটিতে বাড়ি আসে। গত শনিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি ফোন করে হাসপাতালে ডিউটি করতে আসতে বলে । ঈদের দিনেও আমার মেয়ে ডিউটি করেছে । কিন্তু পরের দিন ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে ফোন করে আমাদের বলা হয় রিমা আত্মহত্যা করেছে । খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে এসে দেখি রিমার মৃতদেহ হাসপাতালের নিচের একটি ঘরে শোয়ানো রয়েছে । আত্মহত্যা করলে রিমার দেহ ৫ তলায় নার্সদের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকত। কিন্তু আমার মেয়ের মৃতদেহ ৫ তলা থেকে কিভাবে নিজে এলো ?’ তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে আমার মেয়ের যৌনাঙ্গে রক্তের দাগ ছিল । তাই আমাদের সন্দেহ ওরা আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে গলা টিপে খুন করেছে । বিষয়টি আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি বলে অপমৃত্যু মামলা করেছিলাম । কিন্তু মঙ্গলবার হত্যার মামলা করেছি । আমি আমার মেয়ে খুনের বিচার চাই।’
জানা গেছে,হাসপাতালের এমডি হানিফুর রহমান সুমন (৩৫) ও নার্স লিজাসহ (২৪) অজ্ঞাত ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রজু করেছেন নিহত তরুনীর বাবা । ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই জানা যাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি খুন ।।