দিব্যেন্দু রায়,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),০২ জুলাই : প্রতিবেশী দুই ব্যক্তির একই নাম । হারাধন দাস । দু’জনেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অনুদানের জন্য আবেদন করেছিলে । দু’জনেরই নাম উঠেছে তালিকায় । ইতিমধ্যে এক হারাধন দাস বার্ধক্যজনিত রোগে মারা গেছেন । আর তারপরেই অনুমোদন করা হয়েছে তাঁর অনুদানের টাকা । কিন্তু ঢুকেছে মৃত হারাধনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে । এনিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন । পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লকের শিমুলিয়া ২ পঞ্চায়েতের সিঙ্গত গ্রামের ঘটনা । এখন দুই পরিবারের টানাপোড়েনের মাঝে অতান্তরে পরে গেছে স্থানীয় প্রশাসন ও পঞ্চায়েত । এই বিষয়ে আবাস যোজনার দায়িত্বে থাকা পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি নাজমুল হুদা বলেন,’দুই উপভোক্তার নাম, ঠিকানা এক হওয়ার কারনে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে কিছু ভুলত্রুটি হয়ে গেছে । মৃত হারাধন দাসের টাকা ঢুকেছে জীবিত হারাধন দাসের অ্যাকাউন্টে । যে কারনে এই সমস্যার উদ্ভব হয়েছে । যদিও ব্যঙ্কে চিঠি করে টাকা আটকে রাখা হয়েছে। জেলা থেকে সংশোধন হয়ে আসার পর মৃত হারাধনের ওয়ারিশদের টাকা দিয়ে দেওয়া হবে ।’
জানা গেছে,মঙ্গলকোট ব্লকের সিঙ্গত গ্রামের দাসপাড়ার বসবাস দুই হারাধন দাসের পরিবারের । পরিবারের বর্ষীয়ান সদস্য হওয়ায় দুই হারাধনের নামেই আবাস যোজনার অনুদানের জন্য আবেদন করা হয়েছিল । গত জানুয়ারি মাসে এক হারাধন দাস মারা যান । এদিকে অনুদানের জন্য দু’জনের নামই তালিকাভুক্ত হয়ে যায় । কিন্তু দিন কয়েক আগে যোজনায় অনুদানের প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা জীবিত হারাধনের ব্যাঙ্ক আ্যকাউন্টে ঢুকতেই গোন্ডগোলের সূত্রপাত ।
মৃত হারাধন দাসের ছেলে দীনবন্ধু দাস বলেন, ‘সম্প্রতি পঞ্চায়েতে গিয়েছিলাম অনুদানের টাকার বিষয়ে খবরাখবর নিতে । আর তখনই পঞ্চায়েত থেকে বলা হয় বাবার ব্যাঙ্কের আ্যকাউন্টে টাকা ঢুকে গেছে ৷ এরপর ব্যাঙ্কে এসে জানতে পারি আমাদের প্রতিবেশী হারাধন দাসের আ্যকাউন্টে ঢোকানো হয়েছে ওই টাকা ।’
জানা গেছে,এই খবর ব্যাঙ্ক থেকে পেতেই জীবিত হারাধনের দ্বারস্থ হন মৃত হারাধনের ছেলেরা । ওই টাকা তুলে দেওয়ার জন্য রীতিমতো কাকুতিমিনতি করেন । কিন্তু জীবিত হারাধন দাস ও তাঁর ছেলেদের দাবি ওই টাকার আসল হকদার তাঁরা । তাই টাকা তুলে দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না ।
জীবিত হারাধনের ছেলে ছেলে পরেশ দাস বলেন, ‘অনুদান পেতে দেরি হওয়ায় আমরা ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করেছিলাম । আর তার কয়েকদিন পরেই মোবাইলে টাকা ঢোকার মেসেজও আসে । কিন্তু ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে গেলে আমাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে না । ব্যাঙ্ক থেকে বলছে টাকা আটকে রাখার জন্য নাকি পঞ্চায়েত থেকে বলা হয়েছে । এদিকে আবার পঞ্চায়েত থেকে আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে টাকা তুলে দেওয়ার জন্য ।’ তাঁর দাবি, ওই টাকা তাঁর বাবার আবেদনের ভিত্তিতেই দেওয়া হয়েছে । এই পরিস্থিতিতে জীবিত হারাধনের পরিবারকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে আসল হকদারের হাতে টাকা হস্তান্তর করা কার্যত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্লক প্রশাসন ও শিমুলিয়া ২ পঞ্চায়েতের কাছে ।
যদিও মঙ্গলকোটের বিডিও জগদীশচন্দ্র বারুই বলেন,’নামবিভ্রাটে ও নথি সংক্রান্ত ভুলের কারনে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে । প্রকৃত উপভোক্তাকে অনুদানের টাকা হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ।’।