জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),০২ জুলাই : পরিকাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যা থাকলেও শুধু গুসকরা নয়, আশেপাশের বহু এলাকার গরীব মানুষের বড় ভরসাস্থল পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক মানুষ চিকিৎসার জন্য এখানে আসেন। আউটডোরে পড়ে যায় লম্বা লাইন। সীমিত সামর্থ্য নিয়ে ডাক্তার, নার্স থেকে শুরু করে প্রতিটি স্বাস্থ্যকর্মী সর্বোচ্চ পরিষেবা দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। অথচ হাসপাতাল চত্বরের একটা বড় অংশ আগাছায় পরিপূর্ণ। প্রতি মুহূর্তে থাকে সাপের ভয়। বর্ষাকালে তো সাপের উপদ্রব আরও বেড়ে যায় । শুধু তাই নয়, আগাছার জন্য অনুকূল পরিবেশ পেয়ে মশার বংশবৃদ্ধি হয় দ্রুত। সেক্ষেত্রে ডেঙ্গুর আতঙ্ক তাড়া করে বেড়ায় ‘স্টাফ কোয়ার্টার’-এ থাকা ডাক্তার সহ স্বাস্থ্য কর্মীদের। গত ১ লা জুলাই ‘চিকিৎসক দিবস’-এ চিকিৎসকদের সম্মান জানানোর জন্য পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর যমুনা শিকারী হাসপাতালে এলে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এই সমস্যার দিকে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর সরেজমিনে হাসপাতাল চত্বর ঘুরে সমস্যা উপলব্ধি করেন এবং দ্রুত হাসপাতাল চত্বর পরিস্কার করার সিদ্ধান্ত নেন।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুরসভার সাফাই কর্মীদের নিয়ে শনিবার সাত সকালেই হাসপাতাল চত্বরে হাজির হন চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর এবং শুরু হয় পরিচ্ছন্নতার কাজ। সেই সময় তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শহর তৃণমূল যুব সভাপতি উৎপল লাহা, তৃণমূল কর্মী পিণ্টু ঘোষ প্রমুখ। নাইট ডিউটি করা সত্ত্বেও হাসপাতালের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসা করতে আসা রুগীদের প্রিয় ‘সিস্টার’ নমিতা দত্ত। তার উপস্থিতির জন্য রুগীদের চিকিৎসা পরিষেবা যাতে ব্যাহত না হয় তার জন্য কুশলবাবু কর্তব্যরত ডাক্তারদের আসতে নিষেধ করেন। জানা যাচ্ছে সাফাই কর্মীরা নিয়মিত হাসপাতাল চত্বর পরিস্কার করবে। সাফাই কর্মীর অপ্রতুলতার জন্য যে সমস্যা হচ্ছে সেটা যাতে না হয় তার জন্য পুরসভা থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে । চিকিৎসা করার জন্য হাসপাতালে আসা রুগী ও তার পরিজনরা পুরসভার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ।
গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি যার কাছে সন্তানতুল্য রুগীদের প্রিয় সেই ‘সিস্টার’ নমিতা দত্ত বললেন,’গতকালই আগাছায় পরিপূর্ণ হাসপাতালের অপরিচ্ছন্নতা বিষয়ে চেয়ারম্যান স্যারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল, আজই শুরু হয়ে গেলো পরিচ্ছন্ন করার কাজ। এরজন্য চেয়ারম্যান স্যারকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।’ তিনি আরও বললেন,’ওনাকে হাসপাতাল চত্বরের ফাঁকা জায়গায় একটি ফুলের বাগান তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। এটা যদি হয় তাহলে চিকিৎসা করতে আসা রুগীরা মানসিক আনন্দ পাবে ।’
কুশল বাবু বললেন,’হাসপাতালে রুগীরা আসে চিকিৎসা করানোর জন্য। এসে যদি দেখে সেটি অপরিচ্ছন্ন তাহলে তারা মানসিক দিক দিয়ে ভেঙে পড়তে পারে। অথচ চিকিৎসার জন্য মানসিক জোর জরুরি। তাই হাসপাতাল চত্বর পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রুগী পরিষেবা ব্যাহত না করে নিয়মিত হাসপাতাল চত্বর পরিদর্শন করার জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর যমুনা শিকারীকে পরামর্শ দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাগান তৈরি করে দেওয়ার বিষয়ে আমরা অবশ্যই সদর্থক ভাবনাচিন্তা করব ।’।