প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৮ জুন : বর্ধমানের গোদার মাঠে আয়োজিত সরকারী সভায় সোমফার যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তাই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল সভাস্থল সহ আসপাশ এলাকা ও মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়া আসার রাস্তা । তবুই সেই সভায় যোগ দিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গেলেন প্রৌঢ় তৃণমূল কর্মী রবীন্দ্রনাথ সাঁই ।ঘটনার পর থেকে একটা গোটা দিন পেরিয়ে গেলেও পূর্ব বর্ধমানের মেমারির দেহুড়া গ্রাম নিবাসী বছর ৭২ বয়সী ওই তৃণমূল কর্মীর কোন হদিশ মেলেনি।রবীন্দ্রনাথ বাবুর খোঁজ পেতে তাঁর পরিবার পরিজন ও এলাকার অপর তৃণমূল কর্মীরা পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দ্বারস্থ হয়েছেন।
পরিবার ও এলাকাবাসীর কথায় জানা গেছে, দেহুড়া গ্রাম নিবাসী রবীন্দ্রনাথ সাঁই ভেটনারী দপ্তরের একজন প্রাক্তন কর্মী । তিনি নিঃসন্তান । বাড়িতে তিনি ও তাঁর স্ত্রী থাকেন। তৃণমূল কংগ্রেস দলের কর্মী হিসাবে গ্রামে রবীন্দ্রনাথবাবুর যথেষ্ট নামডাকও রয়েছে। বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন এই কথা তিনি জানতে পারেন । তার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য তিনি সোমবার বেলা ১১ টা নাগাদ গ্রামের অন্য তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে বাসে চড়ে বর্ধমানের সভাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন । বর্ধমানের বাবুরবাগে বাস দাঁড়ালে সকলে বাস থেকে নেমে হেঁটে সভাস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন। তখনই দলছুট হয়ে যান রবীন্দ্রনাথ বাবু।সভাস্থলে পৌঁঁছে যাবার পরেও অন্যারা তাঁকে দেখতে পান ন। এমনকি সভা শেষ হয়ে যাবার পর বাড়ি ফেরার জন্য বাসে উঠেও গ্রামের তৃণমূল কর্মীরা রবীন্দ্রনাথ বাবুকে দেখতে পান না।বর্ধমানে বেশ খানিকক্ষণ অপেক্ষা করে খোঁজা খুজির পরেও রবীন্দ্রনাথ বাবুর খোঁজ না পেয়ে একই বাসে চেপে তৃণমূল কর্মীরা গ্রামে ফিরে যান । গ্রামে গিয়ে অন্য তৃণমূল কর্মীরা বিষয়টি তাঁর পরিবারের লোকেদের জানান ।পরিবারের লোকজন বর্ধমান ও মেমারির বিভিন্ন জায়গায় রবীন্দ্রনাথ বাবুর খোঁজ করেন । মেমারির তৃণমূল বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্যকেও ঘটনার কথা বলেন ।বিধায়কের উপদেশ মতো বর্ধমান ও মেমারি থানাতেও ঘটনার কথা জানান রবীন্দ্রনাথ বাবুর পরিবারের লোকজন । রবীন্দ্রনাথ বাবুর ভাইপো সৌমিত্র সাঁই এদিন বলেন, ঘটনার পর থেকে একটা গোটা কেটে গেলে। কিন্তু আমার কাকার কোন খোঁজ এখনও মেলেনি ।কোথায় রয়েছে,কি অবস্থায় রয়েছে তার কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। পরিবারের সবাই উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন বলে সৌমিত্র সাই এদিন জানান ।
মেমারির তৃণমূল বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন, নিখোঁজ তৃণমূল কর্মীর পরিবারের লোকজন সোমবার রাতে আমার কাছে এছিল ।ঘটনার কথা লিখিতভাবে জানানোর জন্য ওনাদের মঙ্গলবার বর্ধমান ও মেমারি দুই থানাতেই পাঠানো হয় । পুলিশ নিখোঁজ তৃণমূল কর্মী রবীন্দ্রনাথ সাঁইকে উদ্ধার করার জন্য তৎপর হয়েছে । পুলিশ সর্বতভাবে তাঁর খোঁজ চালাচ্ছে“। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিন) সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন,’পরিবারের লোকজন ঘটনার কথা জানানোর পর থেকে পুলিশ বিভিন্ন জায়গাই ওই প্রৌঢ় ব্যক্তির খোঁজ চালাচ্ছে । উনার হদিশ পাওয়ার জন্য ভিভিন্ন জেলার থানা গুলিতেও খবর পাঠানো হয়েছে । পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে ।’।